২০১০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিল হাফলংয়ের সাংখ্য চক্রবর্তী। প্রথম স্থানাধিকারীর সঙ্গে ছিল মাত্র আট নম্বরের ব্যবধান। গত দুই বছরে আট নম্বরের জ্বালা ভুলতে পারেনি সে। তারপর এ বার অসম উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থানটা দখল করার পর মনে হচ্ছে সেই জ্বালা জুড়িয়েছে। এ বার সাংখ্যর লক্ষ্য মহাকাশবিজ্ঞানী হওয়া। শিক্ষক জগন্নাথ চক্রবর্তী ও গৃহবধূ সুমিতা চক্রবর্তীর পুত্র সাংখ্য। ৫০০ নম্বরে পেয়েছে ৪৮২। অঙ্ক (১০০), পদার্থবিদ্যা (১০০) ও বাংলায় (৯৬) রাজ্যের সর্বাধিক নম্বর তাঁর ঝুলিতে।
সাংখ্যের কথায়, ‘‘হাফলং থেকে শিলচরে এসে রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজে ভর্তি হই। কত ঘন্টা পড়েছি, বলা মুশকিল। ঘুমোনো বাদ দিলে বাকি সময় বই-খাতাতেই কেটেছে।’: ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে সুমিতা দেবী বলেন, ‘ওকে পড়ার কথা কখনও বলতে হয়নি। বরং রাত বাড়লে বলতাম, এ বার বই বন্ধ কর।’: এ বার তাঁর লক্ষ্য নাসার বিজ্ঞানী হওয়া। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তেই যে ছেলে বই লিখেছিল ‘পৃথিবী’ নাম দিয়ে। বইটি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে।
তবে বাণিজ্য বিভাগে প্রথম স্থানাধিকারী একই কলেজের ছাত্র যুগলকিশোর রাঠি আগেই ঠিক করে নিয়েছে, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েই সে কলকাতায় চলে গিয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৪৬। যুগল আবার পড়ার ব্যাপারে সাংখ্যের একেবারে বিপরীত। তাঁর বাবা শিলচরের প্রতিষ্ঠিত বস্ত্র ব্যবসায়ী জয়কিশোর রাঠি ও মা গৃহবধূ মধুশ্রী রাঠি দু’জনেই বললেন, “দিনে দুই-তিন ঘন্টার বেশি পড়েনি। কিন্তু হিসাবনিকাশের পড়া তো, যখন পড়েছে মনোযোগ দিয়েছে পুরোপুরি।” |
|
|
সাংখ্য চক্রবর্তী |
যুগলকিশোর রাঠি |
|
একই কলেজ থেকে দু-দুটি বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করায় সাংখ্য-যুগলকিশোরদের মতোই খুশি রামানুজ গুপ্ত কলেজ পরিচালন সমিতির কর্মকর্তা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। সঞ্চালক শ্রীমন্ত দত্ত বলেন, ২০০০ সালে কলেজের প্রথম ব্যাজ পরীক্ষা দেয়। ১৩ বছরে ২৬ জন কৃতী ছাত্র বের হয়েছে এই কলেজ থেকে। তবে এ বারই সেরা। বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে প্রথম-সহ মোট সাতটি স্থান। বিজ্ঞান বিভাগে অন্যান্য কৃতীরা চতুর্থ সন্দীপন চৌধুরী, পঞ্চম সৌগত রায় এবং সপ্তম রাজশেখর নাথ। বাণিজ্যে তৃতীয় শিবম দত্ত এবং চতুর্থ অঙ্কিতা দত্ত। এই বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছে গুয়াহাটি কমার্স কলেজের শুভম ভারতীয়া।
অন্য দিকে, কলা বিভাগের মেধা তালিকায় ছাত্রীদের বেশ রমরমা। ৪৫৮ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে প্রথম বরপেটা জেলার কৃষ্ণকান্ত সন্দিকৈ জুনিয়র কলেজের মীনা কাকতি এবং ডিব্রুগড়ের সল্ট ব্রুক অ্যাকাডেমির অনিন্দিতা চক্রবর্তী। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারী লখিমপুর খেলমা টি জিনিয়াস অ্যাকাডেমির বনজ্যোৎস্না মহন্ত (৪৫৪) ও সল্ট ব্রুক অ্যাকাডেমির সুখার্থিনী দেবী (৪৫৩)। বিজ্ঞানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ক্রমে সল্ট ব্রুক অ্যাকাডেমির দীক্ষিতা শইকিয়া (৪৭৪) ও বরপেটার আনন্দরাম বরুয়া কলেজের মাসুম দাস (৪৬৪)। |