বিজেপির কোন্দল এখন পোস্টার পর্বের
নিজেদের সাতকাহন আর বিরোধী পক্ষের সমালোচনা। রাজনৈতিক পোস্টারের বিষয়বস্তু সাধারণ ভাবে এই দু’রকমই। কিন্তু বিজেপি-র ঘরোয়া কোন্দলও এ বার উঠে এল পোস্টারে। সঞ্জয় জোশীর সমর্থনে কে বা কারা দিল্লি ও আমদাবাদে কিছু পোস্টার সেঁটেছে। উল্লেখযোগ্য যেটা, তা হল কিছু পোস্টারে অটলবিহারী বাজপেয়ীর কবিতার লাইন ব্যবহার করা হয়েছে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে। দলের ভিতরের কোন্দল নিয়ে নানা রকম চাপানউতোর, বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতিই দেখা গিয়েছে সম্প্রতি। যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে দলীয় মুখপত্রেও। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে কোন্দলের জেরে পোস্টার পর্ব এই প্রথম।
নিজস্ব ব্যক্তিত্বের জোরে দলের গণ্ডির বাইরেও নিজের একটা গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তুলতে পেরেছিলেন দলের একমাত্র প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী। এখন তিনি অশক্ত ও নীরব। ঔদার্যের আদর্শে দলকে উদ্বুদ্ধ করতে এক সময় তিনি লিখেছিলেন, “ছোটে মন সে কোই বড়া নেহি হোতা। টুটে মন সে কোই খাড়া নেহি হোতা।” পোস্টার এর সঙ্গে জুড়ে নেওয়া হয়েছে, “কহো দিল সে, সঞ্জয় জোশী ফির সে।” যাঁর সমর্থনে এই পোস্টার, তিনি বলছেন, “কারা এ সব করেছে জানি না।”
সঞ্জয় জোশীর সমর্থনে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে পোস্টার। ছবি: পি টি আই
আজ সকালে দিল্লির বিজেপি সদর দফতর ও দলের বেশ কিছু দলীয় সাংসদের বাড়িতে ওই পোস্টার লাগানো রয়েছে দেখেই হইচই শুরু হয়ে যায়। একই পোস্টার দেখা যায় আমদাবাদের বিভিন্ন এলাকাতেও। কিছু পোস্টারে নিশানা করা হয়েছে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর ঔদ্ধত্যকে, “বিজেপি কি ক্যায়া মজবুরি হ্যায়, নহি চলেগি দাদাগিরি, এক নেতা কো খুশ করে দুসরে কা ইস্তফা মাঙ্গে ... ক্যায়া এহি হ্যায় বিজেপি কি নীতি?” বস্তুত, মোদী যে ভাবে দলের কর্মসমিতি থেকে জোশীকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেছিলেন, তাতে তাঁর স্বৈরচারী মনোভাবের প্রকাশ পেয়েছে, মত দলের অনেক নেতারই।
বিজেপি শিবিরে নরেন্দ্র মোদী ও সঞ্জয় জোশীর অহি-নকুল সম্পর্ক। জোশীকে কর্মসমিতি থেকে না সরানো পর্যন্ত মুম্বইয়ের নীতিনির্ধারক কমিটির বৈঠকেও যেতে চাননি মোদী। কিন্তু অধিবেশন শেষ হতেই ফের সঞ্জয় জোশীকে উত্তরপ্রদেশে আসন্ন পুরসভা নির্বাচনের দায়িত্ব তুলে দেন নিতিন গডকড়ী। স্বাভাবিক ভাবেই মোদী এতে রুষ্ট। মোদী-ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, জোশী গুজরাতে দলকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মোদী-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা কেশুভাই পটেলের সঙ্গে। দলবিরোধী কাজ করা সত্ত্বেও কেন জোশীকে এ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বিজেপি সূত্রে এর সম্ভাব্য উত্তর একটিই। সঙ্ঘের সমর্থন রয়েছে জোশীর পিছনে। তা ছাড়া মোদী বারবার নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরায় বিজেপি-রই শীর্ষ নেতৃত্বের একটি বড় অংশ এখন তাঁর বিপক্ষে। রাজ্যে দলের যাঁর মোদীর উপরে ক্ষুব্ধ, সেই শিবিরেরও সমর্থন রয়েছে জোশীর দিকে। যদিও দলের পক্ষ থেকে এই পোস্টার বিতর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, “এই পোস্টারের সঙ্গে বিজেপি-র সম্পর্ক নেই। তাই মন্তব্য করব না”
মুখে এই কথা বললেও ঘনিষ্ঠ মহলে বিজেপি নেতারা মানছেন, আখেরে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতিই হচ্ছে এতে। দু’পক্ষের কাদা ছোড়াছুড়িতে দুর্বল হচ্ছে বিজেপি-ই। বিশেষ করে এমন একটি সময়ে, যখন আর ক’মাস পরেই গুজরাতে নির্বাচন হতে চলেছে। কেশুভাই-জোশীরা যে ভাবে ওই রাজ্যে মোদী বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটছেন, তাতে নির্বাচনে দলের আসন কমে যেতে পারে। লোকসভা ভোটেও এর খেসারত দিতে হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দলে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.