যে বাড়িতে বেআইনি মদের কারবার চলছিল, তার মালিককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বহাল তবিয়তে তিনি ঘোরাফেরা করছেন, এমনকী, গ্রামবাসীদের হুমকিও দিচ্ছেন। মঙ্গলবার কালনা মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচির কাছে এমনই অভিযোগ জানালেন পূবর্স্থলী ২ ব্লকের মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েতের হালদি নওপাড়া গ্রামের মানুষেরা। মহকুমাশাসক বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আবগারি দফতর ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হতে পারে।”
মঙ্গলবার গ্রামের ১১০ জনের স্বাক্ষর সংবলিত একটি অভিযোগপত্রে গ্রামবাসীরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামের রুস্তম শেখের বাড়িতে বেআইনি মদের কারবার চলছিল। জড়িত ছিল স্থানীয় দোগাছিয়া গ্রামের তরুণ ভট্টাচার্য নামে এক যুবকও। ২৯ মে ওই বাড়িটির কাছাকাছি একটি নম্বরবিহীন মোটরবাইক-সহ যুবককে হাতেনাতে ধরে ফেলে গ্রামের মানুষ। গ্রামবাসীদের কাছে সে দাবি করে, পূর্বস্থলী থানার সঙ্গে মাসিক আর্থিক চুক্তিতে ওই ব্যবসা চালানো হয়। ওই কারবারের সঙ্গে যুক্ত বাড়ির মালিক রুস্তম শেখ ও তাঁর স্ত্রী আজেমন বিবি। এরপর গ্রামবাসীরা রুস্তমের বাড়ি তল্লাশি করতে এলে তিনি আঁশবটি নিয়ে তেড়ে আসেন। এমনকী, তাঁদের হুমকিও দেন যে তরুণ নামে ওই যুবককে পুলিশে দিলে কেউ রেহাই পাবেন না বলে। গ্রামবাসীদের দাবি, তাঁরা সেই ‘হুমকি’ অগ্রাহ্য করে ওই বাড়ি থেকে ১৭টি মদের বোতল ও প্রচুর মদ তৈরি উপকরণও উদ্ধার করেন। এর পর থানাতে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ এলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। পুলিশের কাছে তাঁরা দাবি করেন, ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্রের তালিকা দাখিল করতে হবে পুলিশকে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তা করতে অস্বীকার করে। পরে পুলিশের গাড়ি আটকে রাখেন বাসিন্দারা। ক্ষোভের মুখে পড়ে পূর্বস্থলী থানার আইসি ঘটনাস্থলে গিয়ে বাজেয়াপ্ত জিনিসপত্রের তালিকা দেন। তিনি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে।
কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি, আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনও গ্রেফতার করা হয়নি বাড়ির মালিককে। গ্রামবাসীদের তরফে হাসেম আলি, মহম্মদ বুলবুলরা বলেন, “কারবারিদের গ্রেফতার করার পর ওই বাড়ির বাসিন্দারা আমাদের হুমকি দিয়ে চলেছেন। তাঁরা অপমানজনক কথাবার্তা বলছেন, অপমান করছেন।” তাঁদের আরও দাবি, তরুণবাবুর গ্রেফতারের পরে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ‘বহাল তবিয়তে’ এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে রুস্তম। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে ওই বাড়ি থেকে ফের চালু হতে পারে অবৈধ মদের কারবার। পূর্বস্থলী থানা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। |