শুরু কাটাছেঁড়া
সকালের বাম-উচ্ছ্বাস উধাও বেলা বাড়তেই
বিধানসভার দু’টি আসন আগেই গিয়েছিল। এ বার নগরেরও দখল গেল।
অন্য বারের মতো কেন্দ্রের ঠিক সামনে নয়। এ বার তাঁবুটা ছিল বেশ খানিকটা দূরে। সকালের দিকে কিছুটা ভিড় ছিল। গণনাকেন্দ্রের ভিতর থেকে কিছু ফলাফলের খবর আসার পরে চাপা উচ্ছ্বাসও চোখে পড়ে ওই সময়ে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে হতাশা। ফাঁকা হয়েছে তাঁবু। গত তিনবার ফল বেরোনোর পরে যেখানে গণনাকেন্দ্রের আশপাশ ছেয়ে যেত লাল পতাকা আর আবিরে, এ বার আর সে দৃশ্য নেই।
সকালে যখন গণনা শুরু হয়, তখন অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পরের চিত্রটা কল্পনা করা যায়নি। ১৯টি আসনের ফল ঘোষণা হওয়ার পরে দেখা যায় তৃণমূল ও বামফ্রন্ট ৯টি করে আসন পেয়েছে। নির্দল জিতেছে একটি। এর পরে ডিএসপি টাউনশিপ এলাকার ভোট গণনা শুরু হয়। আগে এই টাউনশিপের ৮টি ওয়ার্ডে বামেরা ৭টি ও কংগ্রেস ১টিতে ক্ষমতায় ছিল। তাই আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছিলেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। কিন্তু ছবিটা পাল্টাতে শুরু করে এই সময় থেকেই। এক এক করে ওই ৮টি ওয়ার্ডই জিতে নেয় তৃণমূল। এর পরে আসে আরও একটি ধাক্কা। বামফ্রন্টের এ বারের মেয়র পদপ্রার্থী বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী হেরে যান হাজারেরও বেশি ভোটে। গণনাকেন্দ্রের সামনের তাঁবুটা তার পরেই প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়।
পার্টি অফিসের সামনে রথীন রায়।নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের দিকে পাল্লা ভারী হওয়া শুরু হতেই শহরের গত দেড় দশকের সিপিএম মেয়র রথীন রায় গণনাকেন্দ্র থেকে সোজা চলে সিটি সেন্টারে দলীয় কার্যালয়ে। রথীনবাবুর অবশ্য দাবি, শেষ পর্যন্ত থাকার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের জন্য থাকতে পারেননি। তিনি পৌঁছনোর আগেই অবশ্য কার্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী, মহাদেব পালের মতো দলের জোনাল নেতারা। ফলাফল নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা সারেন তাঁরা। এর পরে রথীনবাবু টেলিফোনে বিভিন্ন এলাকার নেতাদের নির্দেশ দেন, বিকেলের মধ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফল নিয়ে হাজির হতে হবে। দুপুর দেড়টা নাগাদ বাড়ির পথ ধরেন রথীনবাবু। যাওয়ার আগে তাঁর অভিযোগ, “ভোট শান্তিপূর্ণ হয়নি। কোথাও ভোটারদের বাধা দেওয়া হয়েছে, কোথাও মানুষ ভয়ে বেরোননি। পুলিশের ভূমিকাও আশানুরূপ ছিল না।” এর পরে যোগ করলেন, “যাই হোক, আমরা হেরে গিয়েছি। গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকা পালন করতে চাই।”
বিপ্রেন্দুবাবু সারা দুপুর দলীয় কার্যালয়েই ছিলেন। পুরভোটের ফল খুব খারাপ হয়েছে বলে মানতে নারাজ তিনি। তাঁর দাবি, তৃণমূলের লোকজন বুথ দখল ও পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়ার পরেও বামফ্রন্ট ১১টি আসন পেয়েছে। দু’শোরও কম ভোটের ব্যবধানে হার হয়েছে ৯টি আসনে। সিপিএমের জেমুয়া বিধাননগর লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার আবার দাবি করেন, বিধানসভা ভোটের তুলনায় তাদের ফল ভাল হয়েছে। তাঁর যুক্তি, “অনেক জায়গায় বিধানসভা ভোটের তুলনায় ব্যবধান কমেছে। যেমন, বিধাননগরে ওই ভোটের নিরিখে আমরা পিছিয়ে ছিলাম প্রায় ১৬০০ ভোটে। অথচ এ বার সেখানে আমরা হেরেছি মাত্র ১৮৬ ভোটে।”
এ দিনই সন্ধ্যায় ওয়ার্ডভিত্তিক ফল বিশ্লেষণে বসেন বামফ্রন্টের নেতারা। দু’একদিনের মধ্যেই বৈঠক ডেকে পুরো পরিস্থিতির পর্যালোচনা হবে বলে জানান রথীনবাবু। কোন কোন বিষয় এমন ফলের পিছনে দায়ী, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া হবে বলে জানান রথীনবাবু। তবে তাঁর দাবি, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের ভয়ে আমাদের কর্মীদের একাংশ ভোটে এ বার সে ভাবে মাঠে নামতে পারেনি। ফলাফলে তার ছাপ পড়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.