দুর্ঘটনায় জখম এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর পরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসকদের মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বেলা ৩ টে নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনার পরে মৃত ছাত্রের পরিবার ও তাঁদের পড়শিদের একাংশের বিরুদ্ধে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে খবর দেওয়া হলে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ভাঙচুর, নিগ্রহের সময়ে এক চিকিৎসকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃত ছাত্রের নাম কৃষ্ণ দাস ( ২২) ওরফে মুন্না। তিনি পুরাতন মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মালদহ মেডিকেল কলেজের সুপার হিমাদ্রি আড়ি বলেছেন, “এই ঘটনার পরে চিকিৎসকেরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। মেডিক্যাল কলেজে সশস্ত্র পুলিশ দেওয়ার জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে।” মালদহের জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা জানান, মেডিকেল কলেজের সুপারের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ বাহিনীকে পাঠানো হয়। বতর্মানে হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এখন পযর্ন্ত কোনপক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।” তবে কৃষ্ণের বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ, পথ দুঘর্টনায় পা ভাঙার পরে রোগীকে অনেকটা সময় ধরে শল্য বিভাগের বিভাগের বাইরে ফেলে রাখা হয়। অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে শয্যায় পাঠানোর পরে চিকিৎসককে ডেকে পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ। বেলা দেড়টা নাগাদ সাজিক্যাল ওয়ার্ডের বেডে মারা যাওয়ার পরে রোগীর আত্মীয় ও পরিবারের লোকজন অনেকেই ক্ষিপ্ত হন। ওয়ার্ডেই মেডিকেল কলেজের সাজিক্যাল বিভাগের প্রধান অভিমন্যু বসু ও সহকারী অধ্যাপক দুষ্মন্ত বর্মনকে দেখতে পেয়ে মৃত ছাত্রের পরিবারের লোকজন তাঁদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। সহকারী অধ্যাপকের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের দুই চিকিৎসককে মারতে দেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে তাঁদের রক্ষা করেন। এর পরেই উত্তেজিত জনতা শল্য বিভাগে ভাঙচুর চালায়। ওই ওয়ার্ডের নার্সরা ভয়ে পালান। মালদহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক দুষ্মন্ত বর্মন ও শল্য চিকিৎসা বিভাগের প্রধান অভিমন্যু বসু বলেন, “জরুরি বিভাগ থেকে আমাদের কাছে পাঠানোর পরেই আমরা ওই ছাত্রের ডান পা অপারেশন করেছি। কোনও দেরি হয়নি। ছাত্রের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল, সে কথা তাঁর পরিবারের লোকজনকে জানিয়েছিলাম। এর পরে ওই ছাত্রকে দেখতে ওয়ার্ডে গেলে তাঁর পরিবারের লোকজন আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর শুরু করেন।” |