এখনও অচলাবস্থা কাটল না কালনা হাসপাতালের
খনও অচলাবস্থা কাটল না কালনা মহকুমা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে। শনিবার থেকে হাসপাতালের সুপার অভিরূপ মণ্ডল ছুটিতে যাওয়ার পরে সোমবার পর্যন্ত এই বিভাগে যোগ দিলেন না কোনও চিকিৎসক। সম্পূর্ণ চিকিৎসকশূন্য অবস্থায় এখনও পর্যন্ত পড়ে রয়েছে ওই বিভাগ। ফলে রোগীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
অভিরূপবাবু ছুটিতে যাওয়ার পর থেকে ‘জেলাশাসকের নির্দেশে’ হাসপাতাল দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, “মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকের জন্য স্বাস্থ্যভবনে ফোন করা হয়েছিল। সেখান থেকে দ্রুত চিকিৎসক পাঠানোর ব্যাবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ” তবে ঠিক কবে হাসপাতালে চিকিৎসক মিলবে, তা বলতে পারেননি সুভাষবাবু।
ফাঁকা পড়ে মেডিসিন ওয়ার্ড। —নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, মেডিসিন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন দু’জন। তাঁদের মধ্যে একজন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বদলি হয়ে গিয়েছেন। কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় অপর একজন চিকিৎসকের। এর পর থেকে বদলি হয়ে যাওয়া চিকিৎসকের পদে অস্থায়ী চিকিৎসকদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। অপর পদটি খালি রয়ে গিয়েছিল। ইতিমধ্যে একজন অস্থায়ী চিকিৎসক ২৫ মে অসুস্থতার কারণে ছুটিতে চলে যাওয়ার পর থেকে কার্যত চিকিৎসকশূন্য হয়ে পড়ে ওই বিভাগ। তার পর থেকেই বেশিরভাগ রোগীকেই ফেরাতে শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় হাসপাতালের সুপার কোনওরকমে মেডিসিন বিভাগের কাজ চালাচ্ছিলেন। কিন্তু শনিবার থেকে ছুটি নিয়েছেন তিনিও। তাঁর অনুপস্থিতিতে হাসপাতালের দায়িত্ব নেন সুভাষবাবু। কিন্তু তিনি জানান, দীর্ঘদিন প্র্যাক্টিস না করার কারণে তাঁর পক্ষেও রোগী দেখা সম্ভব নয়।
সোমবার মহকুমা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে গিয়ে দেখা গিয়েছে, হাতে গোনা কয়েকজন রোগী রয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগেরই জ্বর, পেট ব্যাথার মতো ছোটখাটো সমস্যা। তাঁদের রাখা হচ্ছে অন্য বিভাগে। খালি পড়ে রয়েছে বেশ কিছু শয্যা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির ব্যাপারে কোনও কোনও ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না। রোগীর অবস্থা সামান্য খারাপ বুঝলেই তাদের স্থানান্তর করা হচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রোগীর পরিবারদের আগে থেকেই সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে মেডিসিন বিভাগের অবস্থা সম্পর্কে। শনিবার থেকে ছুটি নিলেও মাঝেমধ্যেই মেডিসিন বিভাগের রোগীদের এসে দেখে যাচ্ছেন হাসপাতালের সুপার অভিরূপ মণ্ডল।
এ দিকে মেডিসিন বিভাগের অচলাবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। এ দিন হাসপাতাল চত্বরে এক রোগীর আত্মীয় সমীর সেন বলেন, “মেডিসিন বিভাগ মহকুমা হাসপাতালের হৃদযন্ত্রের মতো। অথচ সেটিই অচল হয়ে পড়েছে। আমার এক আত্মীয় হার্টের অসুখে ভুগছেন। বাধ্য হয়ে তাঁকে নিয়ে যেতে হচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যালে।” গৃহবধূ চম্পা মোদকের কথায়, “রাতবিরেতে হাসপাতালই ভরসা সাধারণ মানুষের। ভাবতে অবাক লাগছে, সেই ভরসার জায়গাটিই নষ্ট হতে চলেছে।” কালনা নাগরিক মঞ্চের সভাপতি পুলক মণ্ডলের দাবি, এ দিন এসএমএস করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায় ও কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে হাসপাতালের দুরবস্থার কথা জানিয়েছেন তিনি।” তাঁর দাবি, মুমূর্ষু কোনও রোগীকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে অন্তত ঘন্টা দুয়েক সময় দরকার। সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীদের স্থানান্তরিত করার আগে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু করে দেন। কিন্তু এখন সেই সুযোগও না থাকায় রোগীদের স্থানান্তরিত করার বিষয়টি আরও ঝুঁকির হয়ে দাঁড়িয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.