ঘামের পথ বন্ধ হয়েই অগ্নিগর্ভ শরীরে বিপর্যয়
রীরের ভিতরের তাপমাত্রা আচমকা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠে গেলে মস্তিষ্কের তাপনিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটি সাময়িক ভাবে বিকল হয়ে যায়। ফলে শরীরের তাপ বাইরে বেরোতে পারে না। দুর্বল বা রুগ্ণেরা তো বটেই, দিব্যি সুস্থ-সবল মানুষও এতে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এমনকী, মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বাইরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়ে শরীরের এই হাল করলে তাকেই বলে হিট স্ট্রোক।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরবিদ্যার প্রধান দেবাশিস সেন বলেন, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের তাপনিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সচল থাকলে দেহের তাপমাত্রা বাড়তে পারে না। কারণ, এটি বাইরের তাপমাত্রাবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ঘর্মগ্রন্থিগুলোর সক্রিয়তা বাড়ায়। ত্বকের তাপমাত্রা শুষে নিয়ে ঘাম বাষ্পীভূত হয়। এতে শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে না। কিন্তু ঘাম বেরোনো বন্ধ হয়ে গেলে বুঝতে হবে, দেহের তাপনিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র আর কাজ করছে না। মানুষ তখনই কাহিল হতে শুরু করে।
গরমে অসুস্থ হয়ে দক্ষিণবঙ্গে সোমবার ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কলকাতায় তাপমাত্রাবৃদ্ধির পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্প হঠাৎ কমে গিয়ে লু-এর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, কিছু মানুষের শরীর যার মোকাবিলা করতে পারেনি। এ দিন মহানগরে রাস্তায় বেরিয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ডাক্তারদের প্রাথমিক অনুমান, ওঁরা হিট স্ট্রোকের শিকার। বর্ধমান-দুর্গাপুরে অন্তত দু’জন তাতে মারা গিয়েছেন। গরমজনিত কারণে ওখানে মারা গিয়েছেন আরও তিন জন। আসানসোলে রাস্তায় নেমে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যদিও তাঁদের কারও ‘হিট স্ট্রোক’ হয়নি বলে মহকুমা প্রশাসনের দাবি। গরমজনিত অসুস্থতায় বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের বক্তব্য, প্রতিটি ক্ষেত্রে ময়না-তদন্তের পরে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
শারীরবিদেরা জানাচ্ছেন, হিট স্ট্রোকের আগে কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ দেখা যায়। যেমন, বমি ভাব থাকলেও বমি হয় না। চলচ্ছক্তি লোপ পায়। হৃৎপিণ্ডের গতি বাড়ে। এবং সর্বোপরি ঘাম বেরোনো বন্ধ হয়ে গিয়ে চামড়ার রং হয়ে যায় লালচে। শরীরে জল কমে গিয়ে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ঝিমুনি আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে জলের পরিমাণ ঠিক থাকলে সহজে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না। যে কারণে এই সময়ে ঘন ঘন নুন-চিনির জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তারেরা।
এ দিকে কলকাতায় এ দিন ডিউটিরত এক ট্র্যাফিক কনস্টেবল অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ট্র্যাফিক কনস্টেবলদের একাংশের অভিযোগ, অধিকাংশ রাস্তায় তাঁদের জন্য ছাউনি নেই। নেই পানীয় জল বা ছাতার ব্যবস্থা। পরিস্থিতি যাচাই করতে আজ, মঙ্গলবার শহরে ঘুরবেন পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা।

ভাল থাকতে
পোশাক
রোদে বেরোলে রোদ
চশমা পরুন
মাথা গামছা বা টুপিতে
ঢেকে রাখুন
হাল্কা রঙের সুতির
পোশাক পরুন
খাবার
বেশি করে তরমুজ,
ফুটি জাতীয় ফল খান
রাস্তার কাটা ফল
একেবারেই খাবেন না
মশলাদার খাবার
একেবারেই খাবেন না

ঘনঘন নুন-চিনি-লেবু
মেশানো জল খান
পানীয়
রাস্তার ধারের
শরবত খাবেন না
 



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.