রোগীর চাপ সামলাতে ‘পেয়িং বেড’ তুলে দিল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে তা সাধারণ ওয়ার্ড বিবেচিত হবে। রোগীরা ‘ফি’ না দিয়েই ভর্তি হতে পারবেন। সোমবার জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পেয়িং ওয়ার্ডের ৬২টি শয্যা সাধারণ ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হবে। বর্তমানে এই জেলা হাসপাতালে ৩৬২টি শয্যা রয়েছে। রোগী ক্যলাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্ননয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “এখন থেকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ‘পেয়িং ওয়ার্ড’ থাকছে না। রোগীরা নিখরচায় সেখানে ভর্তি হতে এবং চিকিৎসা করাতে পারবেন। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।” পেয়িং ওয়ার্ডে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং বাড়তি পরিষেবা দেওয়া হত। সাধারণ ওয়ার্ড করা হলে আগের মতো পরিষেবা কি মিলবে? মন্ত্রীর দাবি, পরিষেবার মান একই রাখা হবে। অন্য ওয়ার্ডেও উন্নত পরিষেবা দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা হাসপাতালে শল্য চিকিৎসার আলাদা ‘ব্লক’ গড়া-সহ বিভিন্ন বিষয়ে এ দিন রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। রোগী কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা যায়, শল্য বিভাগের আলাদা ব্লক তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ৬৭ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। বর্তমান হাসপাতাল ভবনের পিছনে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের যে কোয়ার্টার রয়েছে তারই একাংশে ওই ব্লক গড়ে তোলা হবে। এ মুহূর্তে হাসপাতালে শল্য চিকিৎসার ও মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। সে কারণে বহির্বিভাগে নিয়মিত পরিষেবা দেওয়া অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য, শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য জানান, ওই ২টি বিভাগে বর্তমানে ৩ জন করে বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। আরও ২ জন করে চিকিৎসক পেলে ভাল হয়। সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। হাসপাতালেরই অবসরপ্রাপ্ত শল্য চিকিৎসক তুষারকান্তি ঘোষ স্বেচ্ছাশ্রমে হাসপাতালে পরিষেবা দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। রাজ্য সরকারের তরফে অনুমোদন মিললেই তিনি কাজে যোগ দেবেন। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীও প্রয়োজন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, জেলা হাসপাতাল বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে নথিভুক্ত নেই। প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠিয়ে দ্রুত সেই কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাতে কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্য খাতে এই হাসপাতাল বিভিন্ন সুবিধা পেতে পারবে। হাসপাতালে রোগীদের খাবার তৈরির দায়িত্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা হাসপাতালে সিটি স্ক্যান, ডিজিটাল এক্স-রে এবং ডায়ালিসিস ইউনিট চালু করা হবে বলে জানান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে ওই কাজে আর্থিক সাহায্য করা হবে। ২৪ ঘন্টা ইসিজি বিভাগ চালুর জন্যও চেষ্টা চলছে। ওই কাজের জন্য ২ জন কর্মী চুক্তি ভিত্তিতে নেওয়া হবে। ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’-এ চিকিৎসাধীন শিশুর মায়েদের থাকার জন্য ভাল ব্যবস্থা প্রয়োজন। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে দুই মাইলে জেলা হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হবে। হাসপাতালের সুষ্ঠু অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা গড়তে দ্রুত জলাধার তৈরি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কাজের সুবিধায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে ১০টি কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে।
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
কলেজে গ্রন্থাগার, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স চালুর পরিকাঠামো তৈরি, হাউজ স্টাফের আসন বাড়ানোর মতো বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করলেন উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ। সোমবার উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজে ছাত্রদের হস্টেল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। এ দিন হস্টেলের উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। মন্ত্রী বলেন, “পরিকাঠামো তৈরির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং এই ডেন্টাল কলেজের উন্নয়নে অনেক পরিকল্পনা হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি দুই কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে কলকাতায় স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরে যাব। পরিকল্পনাগুলি যাতে রূপায়িত হয়, সচেষ্ট হব।” রুদ্রবাবু জানান, কলেজে গ্রন্থাগার চালু করতে শিক্ষকরা এগিয়ে আসুক। তাঁরা গ্রন্থাগারের জন্য একটা, দু’টো করে বই দিক। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও এ ভাবে গ্রন্থাগার শুরু হয়। |