ভবিষ্যতে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে বালুরঘাটের দলীয় সাংসদ তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রশান্ত মজুমদারকে ‘সতর্ক’ থাকতে বলল আরএসপি। ‘মমতা-বন্দনা’য় তাঁর কিছু মন্তব্যের ‘ব্যাখ্যা’ চেয়েছিল দল। আরএসপি-র রাজ্য কমিটির বৈঠকে সোমবার প্রশান্তবাবু গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়ার পরে তাঁকে আপাতত ‘সতর্ক’ করে দেওয়া হয়েছে। তবে দলের নবগঠিত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে রয়েছেন প্রশান্তবাবু।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে একটি নির্মীয়মান কলেজের কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য সম্প্রতি জেলার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মহাকরণে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সাংসদ প্রশান্তবাবু। ওই বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষিনীতির প্রশংসা করে প্রশান্তবাবু তাঁকে ‘কৃষকের মা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন, এমনই প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদমাধ্যমের একাংশে। মমতার জমানায় কৃষি ক্ষেত্রে সঙ্কট ঘনীভূত হয়েছে এবং কৃষকেরা আত্মহত্যা করছেন বলে বামফ্রন্টের সর্ব স্তরের নেতৃত্ব সরব। তার মধ্যেই প্রশান্তবাবুর এমন মন্তব্যে বিস্মিত আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী প্রশান্তবাবুর কাছে ‘ব্যাখ্যা’ চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।
দলীয় সূত্রের খবর, এ দিন রাজ্য কমিটির বৈঠকে প্রশান্তবাবু ব্যাখ্যা দেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে কলেজের জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন এবং কিছু কথা বলেছিলেন। তার মধ্যে অন্য কোনও ‘উদ্দেশ্য’ ছিল না। কিন্তু তার জন্য রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী যে ভাবে সরাসরি তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছেন, আরএসপি-র ‘দীর্ঘ দিনের কর্মী’ হিসাবে তিনি তাতে ‘ব্যথিত’। ক্ষিতিবাবু অবশ্য তাঁর জবাবি বক্তৃতায় বলেন, প্রশান্তবাবুর বিশেষ কিছু মন্তব্যে দলের ভিতরে-বাইরে ‘সংশয়’ তৈরি হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা বা প্রকাশ্যে মন্তব্য করার সময় তাঁকে ‘সতর্কতা’ নিতে হবে। প্রসঙ্গত, সংবাদমাধ্যমে ‘বেফাঁস মন্তব্য’ করার জের কী হতে পারে, বাম জমানার মন্ত্রী হিসাবে ক্ষিতিবাবুর সেই ব্যাপারে ‘প্রত্যক্ষ
অভিজ্ঞতা’ আছে!
বৈঠকের পরে ক্ষিতিবাবু বলেছেন, “উনি (প্রশান্তবাবু) সহজ, সাদাসিধে মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য কোনও সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে তাঁর বা দলের অন্য কারও দেখা করতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু মতামত কিছু দেওয়ার থাকলে দলীয় মঞ্চে দেওয়াই ভাল।” আরএসপি-র নতুন রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠকে এ দিন যে ১৫ জনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী গঠিত হয়েছে, তাতে নতুন মুখ পাঁচ জন। বাদও গিয়েছেন পাঁচ জন। তবে তাঁদের মধ্যে প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতা সেনগুপ্ত, অমর চৌধুরী, মিহির বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য কমিটিতেই নেই। সেই অর্থে ‘বাদ’ দেওয়া হয়েছে দার্জিলিং জেলার নেতা বিনয় চক্রবর্তীকে। নতুন এসেছেন শ্রমিক নেতা অশোক ঘোষ, উত্তর ২৪ পরগনার সুকুমার ঘোষ (আগে বাদ গিয়ে আবার ফিরলেন), দক্ষিণ দিনাজপুরের সুচেতা বিশ্বাস, কলকাতার জেলা সম্পাদক কল্যাণ মুখোপাধ্যায় এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার চন্দ্রশেখর দেবনাথ। এ ছাড়া, ‘বিশেষ আমন্ত্রিত’ হিসাবে রাখা হয়েছে জলপাইগুড়ির দেবব্রত ঘোষকে। |