প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস ২১ জুন তৃণমূল জোট সরকারের এক বছরের কাজের মূল্যায়ন নিয়ে বই প্রকাশ করবে বামফ্রন্ট। সোমবার রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে এ কথা জানিয়ে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “ওই দিন নজরুল মঞ্চে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠার আগে ও পরে রাজ্যের অবস্থার কী পরিবর্তন হয়েছিল, তা নিয়ে সভা ডাকা হয়েছে।”
ওই আলোচনা সভায় বক্তা হিসাবে বামফ্রন্টের নেতৃত্বের বাইরে গিয়ে বাম-মনোভাবাপন্ন অর্থনীতিবিদ, সমাজতাত্ত্বিক, সাংবাদিকদের নাম ভাবা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অশোক মিত্র, প্রভাত পট্টনায়ক, জয়তী ঘোষ প্রমুখের নাম ঠিক হয়েছে। এঁদের সঙ্গে কথা বলার পরেই বক্তার তালিকা চূড়ান্ত হবে। কিন্তু কেন প্রথম সারির বাম নেতাদের বাদ দিয়ে এই ধরনের ব্যক্তিদের কথা ভাবা হল? বিমানবাবুর ব্যাখ্যা, তাঁরা গতানুগতিক পথের বাইরে গিয়ে এই আলোচনা সভা করতে চাইছেন। বস্তুত, কেবল সিপিএম বা অন্য শরিক নেতাদের কথা বৃহৎ সংখ্যক বাম-মনোভাবাপন্ন মানুষকে সে ভাবে টানতে পারছে না। এটা বুঝতে পেরেই বিমানবাবুরা এমন ব্যক্তিদের আমন্ত্রণের কথা ভেবেছেন, যাঁরা প্রয়োজনে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে সমালোচনা করতেও পিছপা হবেন না।
রাজ্যের বাম নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, কেবল বামফ্রন্টে সীমাবদ্ধ না-থেকে অন্য বামপন্থী দলগুলির সঙ্গেও আগামী দিনে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সেই লক্ষ্যেই সম্প্রতি সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের দফতরে গিয়ে তাঁদের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বিমানবাবু। কাল, বুধবার সিটু অফিসে বাম সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিমানবাবু বলেন, “যে ভাবে আমেরিকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের সমর-নীতি বিস্তার করতে চলেছে, তা ভয়ঙ্কর। এর প্রতিবাদে বামফ্রন্টের বাইরে থাকা বামপন্থী দলগুলিকেও সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে।” অর্থাৎ লিবারেশন, পিডিএস, এসইউসি-র মতো দলগুলিকে যৌথ কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে যে ভাবে বৃহৎ বাম ঐক্য গড়ে তোলার প্রয়াসকে ‘সিপিএমের উদ্যোগ’ বলে প্রচার করা হচ্ছে, তা নিয়ে শরিক দলের একাংশ ক্ষুব্ধ। সিপিআই নেতা মঞ্জুকুমার মজুমদার এ দিন জানান, বাম সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়ে তোলার জন্য সিপিআই দফতরেই পরপর দু’টি বৈঠক বসেছিল। সেই বৈঠকে ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি ছাড়াও পিডিএস, এসইউসি, লিবারেশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বস্তুত, সিপিএমের উপরে নানা ‘ক্ষোভ’ থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ছোট বামপন্থী দলগুলিকে রাজি করাতে সিপিআই অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে বলে মঞ্জুবাবুর দাবি। |