ইউরো কাপের দলে তিনি নেই। কিন্তু রিও ফার্দিনান্দের ছায়া এতটাই পড়েছে ইংল্যান্ড শিবিরে যে, কোচ রয় হজসন রাতারাতি খলনায়ক হয়ে পড়েছেন। ক’দিন আগে নায়কের স্বীকৃতি পাওয়া প্রবীণ কোচের সমালোচনায় মুখর সে দেশের ফুটবল মহল।
গ্যারি কাহিল ইউরো থেকে ছিটকে যাওয়ার পরই তড়িঘড়ি মার্টিন কেলির নাম ঘোষণা করেন হজসন। কেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অভিজ্ঞ সেন্টার ব্যাক রিও ফার্দিনান্দ নয়? এই প্রশ্নটা উঠে পড়েছে ইংল্যান্ডের ফুটবল মহলে।
নিজের হতাশা চেপে না রেখে টুইটারে ফার্দিনান্দ লিখেছেন, “কী কারণে?????” স্পষ্ট কিছু না বলেই অনেক কিছু বলে দিয়েছেন ফার্দিনান্দ। বোঝাতে চেয়েছেন, এত ফুটবলার চোট পাওয়ার পরেও তাঁর নাম বিবেচ্য নয় কেন? বিতর্ক শুরু সেখান থেকেই। |
অনেকেই মনে করছেন ফার্দিনান্দকে ইংল্যান্ড দলে না ফেরানোর কারণ জন টেরি। গত অক্টোবরে কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে ফার্দিনান্দের ভাই অ্যান্টনের উদ্দেশে বর্ণবিদ্বেষী কথা বলার অভিযোগ আছে টেরির বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ অস্বীকার করলেও টেরির সঙ্গে ফার্দিনান্দের সুসম্পর্ক আর নেই। কোর্টে টেরির সেই মামলার শুনানি ৯ জুলাই। টেরি-ফার্দিনান্দ সঙ্ঘাতের কথা ভেবেই হজসন ম্যান ইউ স্টপারকে বাইরে রাখলেন কি না, গবেষণা তুঙ্গে। যদিও জন বার্নেসের মতো প্রাক্তন ফার্দিনান্দকে না ডাকার পক্ষে।
লিভারপুলের হয়েই কেলি প্রথম এগারোয় শুরু করেছেন মাত্র ১২টি ম্যাচ। প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেনই তো ২২টি ম্যাচে। আর জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক মাত্র ক’দিন আগে। অসলোয় নরওয়ের বিরুদ্ধে কেলি মাঠে নেমেছিলেন বদলি হিসাবে ৮৮ মিনিটে। ফার্দিনান্দ পন্থীদের বক্তব্য, দলের কঠিন পরিস্থিতিতে ৮১ ম্যাচের অভিজ্ঞ ফার্দিনান্দকেই ডাকা উচিত ছিল। বিশেষত যখন ল্যাম্পার্ড ও ব্যারি চোট পেয়ে বাইরে।
ম্যান ইউ ডিফেন্ডারের এজেন্ট জ্যামি মোরালি বলছেন, “ল্যাম্পার্ড, টেরি, ব্যারি, জেরারসব বয়স্করাই ইউরোর দলে ডাক পেল। রিও ওদের থেকে আলাদা কীসে?” আরও যোগ করেন, “যে ফুটবলার ৮১ বার দেশের হয়ে খেলেছে, এমনকী ক্যাপ্টেনও হয়েছে, তার সঙ্গে এই ব্যবহার তো অপমান করাই। যেটা করল হজসন এবং এফএ।”
হজসনের মতে ২৩ জনের দলে ফার্দিনান্দকে না ডাকার কারণ ছিল “ফুটবল সংক্রান্ত ব্যাপার”। কিন্তু বিতর্ক চাপা পড়েনি। বরং ইউরো কাপের দিন কুড়ি আগে কোচের দায়িত্ব নেওয়া হজসনের ইউরোপ অভিযান ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শাস্তির কবলে থাকা ওয়েন রুনি ইউরো-র প্রথম দুই ম্যাচে নেই। শেষ ম্যাচে টেরির হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটও কিছুটা চিন্তায় রেখেছে হজসনকে। যদিও এফএ-র দাবি, টেরি চোট সারিয়ে প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নামবেন।
ভারতের প্রাক্তন কোচ বব হাউটনের হাত ধরে কোচিং জীবনে আসা হজসনের ইউরো অভিযান খুব সুখের হবে, ধরে নেওয়া যাচ্ছে না। রিবেরি-বেঞ্জিমাদের ফ্রান্স ছাড়াও গ্রুপে আছে সুইডেন এবং অন্যতম আয়োজক দেশ ইউক্রেন।
|
সম্ভাব্য প্রথম এগারো
গোলকিপার: হার্ট (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি)
ডিফেন্ডার: জনসন (লিভারপুল), লেসকট (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি), টেরি (চেলসি), কোল (চেলসি)
মিডফিল্ডার: জেরার (লিভারপুল), মিলনার (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি), ইয়ং (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), পার্কার (টটেনহ্যাম), ওয়ালকট (আর্সেনাল)
ফরোয়ার্ড: ওয়েলবেক (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড)
বেঞ্চে থাকবেন যাঁরা
গোলকিপার: গ্রিন (ওয়েস্টহ্যাম), বাটল্যান্ড (বার্মিংহাম)
ডিফেন্ডার: ফিল জোন্স (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), জাগিয়েলকা (এভার্টন), বাইনেস (এভার্টন), কেলি (লিভারপুল)
মিডফিল্ডার: ডাউনিং ও হেন্ডারসন (লিভারপুল)
ফরোয়ার্ড: রুনি (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), ক্যারল (লিভারপুল) চেম্বারলেইন (আর্সেনাল), ডিফো (টটেনহ্যাম) |