বালিতে সিপিএমের মিছিলে হামলার অনেক পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে বলে অভিযোগ করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। আলিমুদ্দিনে সোমবার বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে এই অভিযোগ করে বিমানবাবু বলেন, “হামলা হওয়া মাত্রই পুলিশকে জানানো হয়েছিল।” রাজ্য সরকারের কাছে বিমানবাবুর আবেদন মানুষ যাতে ব্যক্তি স্বাধীনতা ও প্রতিবাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তার জন্য সরকার তৎপর হোক। বিমানবাবুর থেকে এক ধাপ এগিয়ে হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার অভিযোগ করেছেন, “পুলিশের মদতেই তৃণমূল এই হামলা করেছে।” এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বঙ্কিম সেতুর কাছে প্রতিবাদ সভা করে পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেবে বামেরা। সিপিএমের তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল এবং পুলিশ। বালির তৃণমূল ব্লক সভাপতি তপজিল আহমেদ বলেন, “তৃণমূল কর্মীদের উপরে আক্রমণ করে এখন নিজেদের দোষ ঢাকতে সিপিএম আমাদের বদনাম করছে।” এর প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার বালিতে ধিক্কার মিছিল করবে তৃণমূল।
সিপিএমের অভিযোগ খারিজ করে হাওড়ার ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “সিপিএমই প্রথম গণ্ডগোল শুরু করে। পরে তৃণমূল তাদের পাল্টা আক্রমণ করে। পুলিশ প্রথম থেকেই যথেষ্ট তৎপর ছিল।” পারভেজের আরও বক্তব্য, “পুলিশ বালিখাল থেকে কাজিপাড়া পর্যন্ত বামফ্রন্টের মিছিল পাহারা দিয়েছে। কিন্তু লালবাবা কলেজ থেকে বালিখাল পর্যন্ত মিছিল করে যে বাম কর্মীরা যাবেন, তা নিয়ে পুলিশের কাছে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে কোনও পুলিশ ছিল না।” ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও তৃণমূলের কারও বিরুদ্ধে অবশ্য বালি থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি সিপিএম। বিপ্লববাবুর ব্যাখ্যা, “রবিবার থেকেই বালি থানা তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ঘিরে রেখেছে। ফলে, সাহস করে সিপিএমের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ জানাতে যায়নি।” এলাকা ছিল থমথমে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৬টি সিপিএম এবং একটি আরএসপি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। সব দলীয় কার্যালয়েই ভাঙা চেয়ার-টেবিল ছড়িয়ে আছে। ঘটনার প্রতিবাদে কাল, বুধবার জেলা জুড়ে পথসভা করবে জেলা বামফ্রন্ট। হাওড়া ও বালি পুরসভা বামেদের দখলে। বিধানসভা ভোটে বালিতে সিপিএমের ভরাডুবি হলেও আগামী বছর বালিতে পুরভোটের আগে সিপিএম নতুন করে নিজেদের ‘গুছিয়ে’ নিতে চেষ্টা করছে। দু’পক্ষে সংঘাতের সূত্রপাত সেখান থেকে বলে জেলার রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা।
আলিমুদ্দিনে বিমানবাবু বলেন, “যে ভাবে তৃণমূলের নেতৃত্বে পুরসভার চেয়ারম্যান অরুনাভ লাহিড়ীর বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, তাতে স্পষ্ট এ রাজ্যে গণতন্ত্র আক্রান্ত।” তাঁর প্রশ্ন, পেট্রোল-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে কেন মানুষ আক্রান্ত হবেন? তা হলে কি সাধারণ মানুষের দাবিতে এ রাজ্যে কোনও আন্দোলন করা যাবে না? |