শুরু জল্পনা
অণ্ণাদের লড়াইয়ের রাশ কি এখন রামদেবের হাতে
ণ্ণা হজারে থেকে যোগগুরু রামদেব।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্বের নিঃশব্দ পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব। গত কাল এক দিনের প্রতীকী অনশনের পরে আজও গোটা দিন সক্রিয় ছিলেন রামদেব। বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি চিঠি লিখে সময় চেয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর। আরও একাধিক নেতার সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। যা দেখে প্রশ্ন উঠছে, দুর্নীতি তথা বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরানোর আন্দোলনের রাশ এখন প্রকৃতপক্ষে কার হাতে? আরও একটি প্রশ্ন আজ দিনভর ঘুরপাক খেয়েছে। তা হল, যে ভাবে রামদেব সক্রিয় হয়েছেন, তা হলে কি এই আন্দোলনের ‘গৈরিকীকরণ’ ঘটেছে? আজ দিনভর রামদেবের কার্যকলাপ দেখার পরে যে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটা অংশ।
প্রণাম গডকড়ীর। পি টি আই
কংগ্রেস শিবিরের পক্ষ থেকে আজ ফের বলা হয়েছে, রামদেবের এই আন্দোলনের পিছনে বিজেপির প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরও মনে করছে, যে ভাবে আজ নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করে রামদেব তাঁর সমর্থন চেয়েছেন, তাতে কংগ্রেসের অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও এই অভিযোগ খণ্ডন করে রামদেবের শিবির দাবি করেছে, শুধু বিজেপি সভাপতি নন, কালো টাকা প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে সনিয়া গাঁধীর কাছেও। এ ছাড়াও লালুপ্রসাদ, শরদ যাদব, মুলায়ম সিংহ-সহ অন্য দলের নেতাদের সঙ্গেও দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন রামদেব। ফলে এই আন্দোলনকে শুধু মাত্র সরকার-বিরোধী বলা উচিত নয়।
রামদেব-শিবির যা-ই ব্যাখ্যা দিক, সরকার-বিরোধী এই আন্দোলনের রাশ যোগগুরুর হাতে আসায় স্বস্তিতে বিজেপি। দলের বক্তব্য, রামদেব প্রথম থেকেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ। তাই আগামী দিনে তিনি আন্দোলনে নামলে তা আদতে বিজেপিরই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বিজেপি সূত্রের দাবি, সম্প্রতি রামদেবের সঙ্গে নিতিন গডকড়ীর একটি বৈঠক হয়। সেখানে রামদেব বিজেপি সভাপতিকে জানান, লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি একটি রাজনৈতিক দল গড়বেন। যারা ইউপিএ সরকারের দুর্নীতির বিষয়গুলি সামনে রেখে আন্দোলনে নামবে। দলীয় সূত্রে বলা হয়েছে, নিতিন রামদেবকে বোঝান, আলাদা দল করলে কংগ্রেস বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে যাবে। তাতে আখেরে সুবিধা হবে কংগ্রেসেরই। গডকড়ীর এই যুক্তি মেনে নেন রামদেব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিতিন তাঁকে আশ্বাস দেন, বিজেপি রামদেবের আন্দোলনকে সমর্থন জানাবে। সেই প্রতিশ্রুতি মতোই আজ নিতিন রামদেবকে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, “কালো টাকা উদ্ধারের লড়াইয়ে বিজেপি রামদেবের সঙ্গেই আছে।”
তবে শুধু বিজেপি নয়, রামদেব চাইছেন অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও তাঁর আন্দোলনে টানতে। যা কার্যত ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে অণ্ণাদের পালের হাওয়া কেড়ে নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ‘মুখ’ হয়ে উঠতে পারবেন রামদেব। কারণ লোকপাল বিল হোক বা কালো টাকা উদ্ধারের মতো বিষয় টিম অণ্ণা প্রথম থেকেই রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে বিরোধিতার রাস্তায় হেঁটেছে। ফলে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমর্থন হারিয়েছে তারা। কিন্তু বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধারের যে লড়াই রামদেব নতুন করে শুরু করেছেন, তাতে তিনি কৌশলী পদক্ষেপ করে সব দলকেই সঙ্গে নিয়ে এগোতে চাইছেন। এমনকী গত কালও অনশন মঞ্চ থেকে কোনও নেতার নামে কোনও কটূক্তি করেননি রামদেব। উল্টে অণ্ণা-ঘনিষ্ঠ অরবিন্দ কেজরিওয়াল তা করায়, প্রকাশ্যেই তাঁর সমালোচনা করেছেন তিনি। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, কালো টাকার উদ্ধারের বিষয়টি এমনই স্পর্শকাতর যে, কোনও দলই এর বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটতে চাইবে না। বরং প্রকাশ্যে সব দলই একে সমর্থন করবে। রামদেব এতে আখেরে জনমত তৈরি করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতে সক্ষম হবেন বলেই মনে করেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.