কুনকি চঞ্চলকে নিয়ে চিন্তা চেকো বিটে
নবরত দুলিয়ে চলেছে মাথা। এক মুহুর্তের বিরাম নেই। বছর পনেরোর মাকনা হাতি চঞ্চলের এটাই অসুখ। আর চঞ্চলের ওই রোগ নিয়েই দুশ্চিন্তার শেষ নেই বন দফতরের কর্তাদের। চিকিৎসককে দিয়ে চঞ্চলের শারীরিক পরিস্থিতি পরীক্ষা করানো হয়েছে। কিছু ওষুধও খাওয়ানো হয়েছে। তবু রোগ সারার কোনও লক্ষণ নেই। বরং অসুস্থ ওই হাতিকে নিয়ে অন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। এক বছরের মধ্যে তিন বার মাহুত ও পাতাওয়ালার উপর আক্রম করেছে চঞ্চল। বনকর্মীরা কেউই ওই হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গল পাহারায় যেতে চাইছেন না। মাহুত ও পাতাওয়ালারাও একা ওই হাতির কাছে ঘেষতে চাইছেন না। রোগ গুরুতর আশঙ্কা করে চেকো বিটের এই কুনকি হাতিতে আপাতত চিকিৎসার জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। পিলখানাতেই সারা দিন কাটছে তার। অন্য কুনকি হাতিদের মতো জঙ্গল পাহারা কিংবা মালপত্র টেনে আনার কাজ করতে হচ্ছে না তাকে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা (পশ্চিম) বিজয়কুমার সালিমাথ বলেন, “দমনপুর রেঞ্জের চেকো বিটে তিনটি কুনকি হাতির মধ্যে একটি বছর কয়েক আগে অবসর নিয়েছে। বছর পনেরোর মাকনা হাতি চঞ্চল মাস ছয়েক ধরে চিকিৎসার কারনে ছুটিতে রয়েছে। এখন মাত্র একটিই হাতি জঙ্গল পাহারার কাজে যাচ্ছে। এতে জঙ্গল পাহারার কাজে সমস্যা হচ্ছে।”
ছবি তুলেছেন নারায়ণ দে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশু চিকিৎসক দীপক শর্মা জলদাপাড়ার পশু চিকিৎসক অশোক সিংহ ও ফালাকাটা ব্লকের পশু চিকিৎসক গোপাল সামন্তকে নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা শুরু হয়েছে চঞ্চলের। মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, সঠিক প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় মাঝে মাঝেই হিংস্র হয়ে উঠছে এই হাতি। অসমের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও চঞ্চলকে প্রশিক্ষিত মাহুতের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে বলেছেন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চঞ্চলের মা চম্পা বন দফতরের কুনকি। ১৯৯৭ সালে সাউথ রায়ডাকে চঞ্চলের জন্ম হয়। জন্মের কয়েক মাস পরে তাকে নিয়ে আসা হয় চেকো বিটে। তারপর নীলপাড়া রেঞ্জ ও গুদামডাবরিতে প্রশিক্ষণ চলে। প্রথম থেকে স্বভাবে দুষ্টু হওয়ায় নাম দেওয়া হয় চঞ্চল। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশু চিকিৎসক দীপক শর্মা জানান, মাস ছয়েক ধরে চঞ্চল বেকাবু হয়ে রয়েছে। অনবরত মাথা নেড়ে চলেছে। কাছাকাছি লোকজন গেলে খেপে উঠছে। তাই চঞ্চলকে জঙ্গলে টহলের কাজে পাঠানো হচ্ছে না। সামনে-পিছনের পায়ে শিকল দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেল-সহ অন্যান ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। দীপকবাবু বলেন, “সঠিক প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় মাঝে মাঝে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে চঞ্চল। বিশেষজ্ঞ মাহুত দিয়ে প্রশিক্ষণ দিলে ও স্বাভাবিক আচরণ করবে।” চঞ্চলের মাহুত পরিমল রায় বলেন, “চঞ্চল সবসময়ে খেপে থাকে। আমরা ওর কাছে যেতে ভয় পাই। পাতাওয়ালা বা অন্য মাহুত সঙ্গে থাকলে তবে আমরা ওর কাছে যাই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.