যৌনপল্লিতে পাচার তরুণী, পুলিশের জালে স্বামী-শ্বশুর
বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। পরে কলকাতায় পাচার করে দেওয়ার অভিযোগে তরুণীর স্বামী ও শ্বশুরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
তরুণীর বাপের বাড়ি বাঁকুড়ার ইন্দাসে ছোট গোবিন্দপুর গ্রামে। বাঁকুড়ারই পাত্রসায়র পাটিত গ্রামে শ্রীকান্ত পালের ছেলে কৃষ্ণচন্দ্র পালের সঙ্গে বছর সাতেক আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের ছয় ও চার বছরের দু’টি মেয়ে আছে। তরুণীর অভিযোগ, ডাক্তার দেখানোর অছিলায় স্বামীর এক ‘বন্ধু’র সঙ্গে তাঁকে কলকাতায় পাচার করা হয়েছিল। এক শুভানুধ্যায়ীর সাহায্যে পরের দিন তিনি বাপের বাড়িতে ফেরেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কৃষ্ণচন্দ্র ও তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তরুণী গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন। তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, লাখ টাকা পণের জন্য বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে তাঁর উপরে নির্যাতন চালানো হত। পরপর দুই মেয়ে হওয়ায় অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। গত মঙ্গলবার ডাক্তার দেখানোর নাম করে তাঁকে বর্ধমানের খোসবাগানে নিয়ে যান কৃষ্ণচন্দ্র। কিন্তু সেখানে গিয়ে বলা হয়, বড় ডাক্তার দেখাতে কলকাতায় যেতে হবে। ‘বন্ধু’ পরিচয় দিয়ে তরুণীর অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তাঁকে কলকাতার বাসে তুলে দেন কৃষ্ণচন্দ্র। জানান, তিনি পরের বাসেই আসছেন।
শনিবার রাতে ইন্দাসে বাপের বাড়িতে বসে তরুণী জানান, তিনি সরল বিশ্বাসে বাসে চেপেছিলেন। কলকাতায় কোথায় গিয়ে নামেন, তা তিনি বলতে পারেননি। কিন্তু যে জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাঁকে তোলা হয়, সেখানে পা দিয়েই তিনি বুঝে যান যে সেটি ‘খারাপ জায়গা’। তাঁর কথায়, “আমার স্বামী আর আসেননি। বুঝে যাই, আমায় বিক্রি করে দেওয়ার জন্যই আনা হয়েছে। কান্নাকাটি জুড়ে দিই। পরের দিন ওখানকারই এক জন ধর্মতলা থেকে আমায় বর্ধমানের বাসে তুলে দেন।” বর্ধমানে পৌঁছে এক পরিচিতকে ফোন করে তিনি বাপের বাড়ি পৌঁছন।
ইন্দাসেরই কিছু লোকজন তরুণীর স্বামী-শ্বশুরকে ডেকে এনে সালিশি করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ‘মীমাংসা’ হয়নি। তরুণীর অভিযোগ, এর পরেই তাঁরা ইন্দাস থানায় বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারা বর্ধমান বা পাত্রসায়রে গিয়ে
নালিশ রুজু করতে বলে। বৃহস্পতিবার তিনি বর্ধমান থানায় স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ ও ননদাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, যে ‘বন্ধু’ তরুণীকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিল, তার নাম সম্ভবত ‘রাজু’। তার খোঁজ চলছে। শুক্রবার বর্ধমান আদালত দুই ধৃতকে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছে। বাকিদের ধরা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.