উপযুক্ত নম্বর থাকা সত্ত্বেও স্কুলে ভর্তি হতে না পারার অভিযোগে ঘেরাও করা হল প্রধান শিক্ষককে। মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের ঘটনা। ছাত্র ও অভিভাবকদের অভিযোগ, মাধ্যমিকে ৭০ শতাংশের উপর নম্বর পেলেও একাদশ শ্রেণিতে তাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিকে স্কুলের ১৭৪ জন ছাত্র ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুসারে, ৭০ শতাংশ নম্বর পাওয়া পড়ুয়াকে তার পুরনো স্কুলেই ভর্তি নিতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষও সেই নিয়ম জানেন। তবুও ৩৪ জন ছাত্রকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি নেওয়া হয়নি।
প্রধান শিক্ষক শম্ভনাথ চক্রবর্তী ও পরিচালন সমিতির সদস্য তারকনাথ রুদ্র বলেন, “বিজ্ঞান শাখায় ১২০টি আসন ছিল গত বার। এ বার তা বাড়িয়ে ১৪০ করা হয়েছে। তার বেশি ছাত্র ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, বিজ্ঞান বিভাগে পঠন-পাঠনের জন্য পরীক্ষাগার ব্যবহার করতে হয়। তবে আমরা জেলা স্কুল সমূহের পরিদর্শককের কাছে আসন বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছি।” |
কিন্তু নিজের স্কুল ছেড়ে অন্যত্র ভর্তি হতে চাইছেন না প্রায় কোনও ছাত্রই। এমনই এক ছাত্র মহম্মদ ফারুকের প্রশ্ন, “যে স্কুলে ১০ বছর পড়েছি, ভাল নম্বর পেয়েছি, সেখান থেকে অন্যত্র কেন যেতে হবে?” শুভজিত ঘোষ, শুভময় দত্ত মজুমদারদেরও একই কথা। তাদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষকেই ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সে জন্যই এ দিন বিক্ষোভ দেখন তারা।
স্কুলের পরিচালন সমিতি অবশ্য ওই ৩৪ জন ছাত্রদের আরেকটি প্রস্তাবও দিয়েছেন। তাঁরা জানান, স্কুলে গত বছর থেকে ইংরেজি মাধ্যমে বিজ্ঞানের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতে ছাত্র সংখ্যা কম। ওই ৩৪ জন ছাত্রকে সেখানে ভর্তি হওয়ার কথা বলছেন তাঁরা। তারকবাবুর দাবি, “উচ্চশিক্ষায় এখন ইংরেজির বিকল্প নেই। ওই ছাত্রেরা অনায়াসে স্কুলের ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করতে পারে। তাতে তাদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” তবে অভিভাবকেরা তাতে রাজি নন। তাঁদের পাল্টা দাবি, ছেলেদের উপরে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াটা বাড়তি চাপ হয়ে যেতে পারে। স্কুল বরং তাদের থেকে যারা বেশি নম্বর পেয়েছে, তাদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার প্রস্তাব দিক।
বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “ওই স্কুলের ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যার কথা শুনেছি। অবিলম্বে জেলা স্কুলসমূহের পরিদর্শককে বিষয়টির দিকে নজর দিতে বলব।” |