|
মনোরঞ্জন... |
|
বইপোকা |
আইপিএল শেষ। গরমের ছুটির আরও দিন দশেক বাকি। এ বার সময় কাটবে কী করে?
কেন বই আছে তো! তারা-রা কী পড়ছেন? আপনিও কি তাই পড়ছেন? মিলিয়ে নিন... |
|
অনুপম রায়, গায়ক
কী পড়ছি: কমল চক্রবর্তীর কবিতার বই ‘কুকুর’।
কেন ভাল লাগছে: দুর্দান্ত লেখার স্টাইল। তা ছাড়া কমলদা ‘কৌরব’ ম্যাগাজিন চালনা করেন। ওঁর খুব ফ্যান আমি।
পড়ার প্রিয় সময়: সে রকম নির্দিষ্ট কিছু নেই। বিশেষ করে ফ্লাইটে। যখন ট্র্যাভেল করি।
বই না ট্যাবলেট: একদমই না। ও ধার মাড়াই না। তবে ইন্টারনেটে কবিতা পড়ি।
প্রিয় সঙ্গী: আমি একসঙ্গে অনেক কিছু, মানে মাল্টিটাস্কিং করতে পারি না। তাই যখন বই পড়ি, তখন সঙ্গী শুধু বই। |
|
|
সাহেব ভট্টাচার্য, অভিনেতা
কী পড়ছি: ব্রায়ান ওয়াইজ-এর ‘মেনি লাইভস মেনি মাস্টারস’।
কেন ভাল লাগছে: বিগত জীবন নিয়ে লেখা। এই সবে আমার বিশ্বাস নেই। ঠিক সেই জন্যেই পড়ছি। জানার জন্য। বই পড়ার সে রকম অভ্যেস ছিল না। কয়েক বছর আগে যখন বেশ খারাপ সময় যাচ্ছিল, তখন ধরেছিলাম। জেফ্রি আর্চার-এর ‘নট আ পেনি মোর নট আ পেনি লেস’ আমার খুব প্রিয়। ভাল গল্প ন্যাচেরালি আমার ভীষণ ভাল লাগে। সেই দিক থেকে সত্যজিৎ রায় আমার সর্বকালের সেরা।
পড়ার প্রিয় সময়: রাত। যখন চিত্রনাট্য পড়ার
থাকে না।
পড়ার সময় প্রিয় গ্যাজেট: আমার ল্যাপটপ। যখনই কোনও লাইন মনে ধরে তখনই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সেটা তুলে দিই। লাইনটা ফেসবুক আপডেটে লিখে দিই। নিজেকে একটু আঁতেল দেখাতে হবে না! হাহা... তবে সেই লাইনগুলো আমার সেই সময়ের মনের কথাও বলে।
প্রিয় সঙ্গী: আইপডে গান। পরিবেশটাও অবশ্য সে রকম হওয়া চাই। হালকা আলো, একটা ঘুম-ঘুম ব্যাপার... |
|
|
প্রিয়ঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেত্রী
কী পড়ছি: সদ্য প্রকাশিত সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের দশটি কিশোর গল্প।
কেন ভাল লাগছে: ‘ডোরাকাটা জামা’, ‘ইতি তোমার মা’, ‘ইতি পলাশ’... কী দারুণ সব গল্প! স্বপ্নের জগৎ যেন। একসঙ্গে হাসাতে, কাঁদাতে পারে এই গল্পগুলো। এমনিতে মুড অফ থাকলে আমার টোটকা হল শিবরাম চক্কোত্তির গল্প। তা ছাড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নারায়ণ সান্যাল, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় আর হুমায়ুন আহমেদ তো আছেনই।
পড়ার প্রিয় সময়: যখন-তখন। শুটিংয়ের ফাঁকে। ছুটি থাকলে। সে রকম ভাল কিছু ধরলে সারা রাতও পড়ি মাঝে, মাঝে। দিনের আলো ফোটার পর ঘুমোতে যাই!
বই না গ্যাজেট: আমার ফোনে রিডার্স অ্যাপ্লিকেশন নামে একটা ব্যাপার আছে। যেটার আমি কিছুই বুঝি না। অবশ্য তাতে কিছুই যায় আসে না। ওই বইতেই আমি খুশি।
প্রিয় সঙ্গী: রাহুল। ওর কাছ থেকেই তো ভাল ভাল বই পাই। ছোটবেলা থেকেই তো বই গিফ্ট করত। এখন ও একটা বই শেষ করে আমাকে দেয়। আমার শেষ হলে ওকে দিই। |
|
|
গৌরব চক্রবর্তী, অভিনেতা
কী পড়ছি: দেব আনন্দ-এর আত্মজীবনী ‘রোম্যান্সিং উইথ লাইফ’।
কেন ভাল লাগছে: অসম্ভব পজিটিভ একটা বই। সেই কোন কালে সুদূর লাহৌর থেকে ভারতে এসেছিলেন পকেটে মাত্র দশ টাকা নিয়ে। সেই দিন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শাহরুখ খান-এর সঙ্গেও ‘লড়ে নেব’ মানসিকতা নিয়ে লড়াই চালিয়েছেন - পুরো জীবনটাই চমকে ভরা। দারুণ লেখার স্টাইল। ওঁরই মতো। স্মার্ট। পড়তে পড়তে নিজের মধ্যে একটা শক্তি অনুভব করছি। এমনিতেই সিনেমার বই পড়তে দারুণ লাগে। অমিতাভ বচ্চন, মনমোহন দেশাই, প্রাণ - সবার আত্মজীবনীই পড়েছি। আমিও তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিরই ছেলে। তাই সেখানকার খুঁটিনাটিগুলো জানতে পারলে দারুণ লাগে। এ ছাড়া বিভুতিভূষণের (বন্দ্যোপাধ্যায়) ‘চাঁদের পাহাড়’ যে কত বার পড়েছি তার ঠিক নেই। আর ফেলুদা সমগ্র তো আছেই।
পড়ার প্রিয় সময়: বেশির ভাগই রাতে শুতে যাওয়ার আগে।
পড়তে, পড়তে আর কী করি: আমার ল্যাপটপে প্রায়ই খুটখাট করি। মেল-টেল চেক করি আর কী।
প্রিয় সঙ্গী: এই ব্যাপারে আমি একেবারে সুখী বাঙালি। হালকা এ সি চালিয়ে, আধশোয়া হয়ে, গায়ে পাতলা চাদর টেনে নিয়ে বই পড়ার মজাই আলাদা! |
|
|
নুসরত জাহান অভিনেত্রী
কী পড়ছি: শোভা দের ‘স্পাউস: দ্য ট্রুথ অ্যাবাউ ট ম্যারেজ’।
কেন ভাল লাগছে: ভীষণ রিয়েল একটা বই। এক বারও মনে হয়নি চরিত্র বা সিচুয়েশানগুলো বানানো। যা লিখেছেন তার অনেকটাই আমাদের জানা। তাও লেখার গুণে জানা জিনিসও বার বার পড়তে ভাল লাগে।
পড়ার প্রিয় সময়: দুপুরবেলা। সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর। আমি একটা বই নিয়ে বেশি দিন কাটাতে পারি না। ভাল লাগলে একবারে পড়ে ফেলি। ভাল না লাগলে মাঝ-পথেই ছেড়ে দিই।
বই না গ্যাজেট: আমি নানা রকমের গ্যাজেট ভালবাসি। কিন্তু সেটা বইয়ের ব্যাপারে নয়। সেখানে আমি রক্ষণশীল। হাতে বই থাকতে হবে।
প্রিয় সঙ্গী: চা! চা!
ঘন ক্রিম, দুধ, চিনি দেওয়া। |
|
|
রাইমা সেন, অভিনেত্রী
কী পড়ছি: এখন একটু দম নিচ্ছি। সপ্তাহখানেক আগে মার্লন ব্র্যান্ডো’র আত্মজীবনী ‘সঙ্স মাই মাদার টট মি’ শেষ করলাম। আহা কী বই! খুব মজা করে লেখা। একে ওই রকম দুর্ধর্ষ অভিনেতা। তার ওপর মারকাটারি হ্যান্ডসাম এক পুরুষ। সেই সময় হলিউডের এমন কোনও সুন্দরী নেই যাঁকে ডেট করেননি। ওঁর সম্বন্ধে কত অজানা তথ্যও জানতে পারলাম। যেমন তিনি রেড ইন্ডিয়ান অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। দুর্দাম্ত রঙিন চরিত্র। পরের বইটা দু’এক দিনের মধ্যেই ধরব। ইনগ্রিড বার্গম্যান-এর আত্মজীবনী। ওই আর এক লাস্যময়ী সুন্দরী। বাপ রে বাপ! আসলে এঁদের জীবনটাই এত ইন্টারেস্টিং যে একবার ধরলে আর ছাড়াই যায় না। কী রকম ভাবে সামলান নিজেদের জীবনকে, প্রফেশনকে। নিজে এই প্রফেশনে থাকার জন্য খুব রিলেট করতে পারি।
পড়ার প্রিয় সময়: বেশির ভাগ সকালে। মানে ঘুম থেকে উঠে, কোনও কাজ শুরু করার আগেই। রাতে পড়লে আমার ঘুম নষ্ট হয়ে যায়। মাথায় বইটা ঘুরতে থাকে। যদি ভাল লেগে যায় তাহলে একটানা তিন-চার দিন বাড়ি থেকেই বেরোই না। বাড়ির লোক বিরক্ত হয়ে যায়।
বই না ট্যাবলেট: ও সব আমার পোষায় না। আমার ই-মেল’এ চিত্রনাট্যই পড়তে ভাল লাগে না। কেউ পড়ে শোনালে ভাল লাগে। এক বার লন্ডনে গিয়ে কিন্ডল কিনতে চেয়েছিলাম। সেটা হয়ে ওঠেনি। পরের বার দেখি আবার চেষ্টা করব। এটা কিন্তু একেবারে শখ করে। এমনিতে শক্ত-বাঁধাই সোজা-সাপ্টা বই-ই আমার প্রিয়।
প্রিয় সঙ্গী: আমার বিশাল মগ। যেটার সাইজ দেখে লোকে আঁতকে ওঠে। সেই মগ-ভর্তি ধোঁয়া-ওঠা চা। কোনও হার্বাল বা লিকার না। একেবারে দুধ, চিনি দেওয়া। আহ্! |
|
|
সুহেল শেঠ, কলামনিস্ট এবং মার্কেটিং গুরু
কী পড়ছি: পিটার বার্জেন-এর ‘ম্যানহান্ট’।
কেন ভাল লাগছে: বইটা ওসামা বিন লাদেন-এর শেষ বছরগুলো নিয়ে। টানটান রোমহর্ষক বই। পাতায় পাতায় উত্তেজনা। তথ্য সমৃদ্ধ এবং ক্ষুরধার বিশ্লেষণে ভারি। সন্ত্রাসবাদী এবং সন্ত্রাসবাদের পুরো চেহারাটা কিছুটা ধরতে পারা যায়। হোয়াইট হাউস কী ভাবে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছয় তারও একটা আঁচ পাওয়া যায়। এবং শেষ পর্যন্ত কী ভাবে আমেরিকা ওসামা কেসটা সল্ভ করল সেটারও একটা ছবি দেয়।
পড়ার প্রিয় সময়: যেখানে সেখানে। একমাত্র বাথরুম ছাড়া। বই হল সম্মানের জিনিস। তাই বাথরুমে টেনে নিয়ে যেতে পারি না। এখন এত ট্র্যাভেল করতে হয় যে প্লেনই প্রায় ঘর-বাড়ি হয়ে গেছে। সেখানেই বেশির ভাগ বই পড়ি।
কী ভাবে পড়ি: যেমন সাধারণ ভাবে হাতে বই নিয়ে পড়ে, সে ভাবেই। ওই ট্যাবলেট-ফ্যাবলেটে পড়া আমার পোষায় না। আরে ট্যাবলেট তো খাওয়ার জিনিস ভাই! আমি ওসবে একদম নেই।
প্রিয় সঙ্গী: কিচ্ছু না। আমি আর আমার অকৃত্রিম বাঁধানো বই। ব্যস। |
|
সাক্ষাৎকার: শতরূপা বসু |
|
|