|
নৃত্য সমালোচনা... |
|
সফল চিত্রাঙ্গদা |
চৈতী ঘোষ |
ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাসে কবিগুরুর জাভা, বালি দ্বীপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সফর এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। বিশেষত তাঁরই প্রচেষ্টায় এই দেশগুলির বিস্মৃতপ্রায় সংস্কৃতি ও শিল্পকলার সঙ্গে যোগসূত্রটি নতুন করে স্থাপিত হয়। আজ তাঁর জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় আইসিসিআর-এর নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহে ‘ধ্বনি’ আয়োজন করে ‘বালিনিজ প্রেক্ষাপটে রবিঠাকুরের নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা’।
পণ্ডিতজির সঙ্গীত পরিচালনায় দক্ষিণ-পূর্ব মহাদেশীয়, হিন্দুস্থানি ক্ল্যাসিক্যাল ও লোকসঙ্গীত এই ত্রিধারা মেলবন্ধনের অভিনব প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। |
|
‘ধ্বনি’র প্রযোজনায় নজর কাড়লেন ডোনা। |
যদিও সমগ্র উপস্থাপনাটিতে কোথাও যেন একটু অসঙ্গতি থেকেই যায়। নৃত্যনাট্যটিতে প্রধানত ওড়িশি নৃত্যধারা প্রাধান্য পায়। কুরূপার ভূমিকায় ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় ও সুরূপার ভূমিকায় বৈশাখী গঙ্গোপাধ্যায় বেশ সাবলীল। ডোনার দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায় তার পরিশীলিত ও বলিষ্ঠ অভিনয়ে। বৈশাখীর লাবণ্যমণ্ডিত শরীরী বিভঙ্গ মন ছুঁয়ে যায়। অর্জুনের ভূমিকায় ছিলেন রঘুনাথ দাস। এ ছাড়া চূড়ামণি সম্প্রদায়ের নৃত্যশিল্পীদ্বয়ের উপস্থাপনা ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। যদিও বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে ডোনার প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিল্পীবৃন্দ। তাদের নৃত্যে দীর্ঘ অনুশীলনের ছাপ বর্তমান। এ ছাড়া শ্রীকান্ত আচার্য ও রায়া ভট্টাচার্যের ভাষ্যপাঠ এবং ইন্দ্রাণী সেন, সুপ্রতীক দাস ও জয়তী চক্রবর্তীর সুরেলা কণ্ঠসঙ্গীত দর্শকদের মুগ্ধ করে। |
স্নিগ্ধ সজল অভিনয় |
বারীন মজুমদার |
নৃত্যনাট্য ‘শ্যামা’ রূপায়িত হল রবীন্দ্রসদনে ‘মল্লার’-এর অনুষ্ঠানে। নৃত্যনাট্যের নৃত্যাভিনয় ও সঙ্গীতাংশের সঠিক রূপায়ণ দু’টিই সমান জরুরি। এই প্রযোজনায় সঙ্গীতাংশ বেশ ভাল। ‘শ্যামা’র সঙ্গীত ও নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন যথাক্রমে অলক রায়চৌধুরী ও দীপ্তাংশু পাল। সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দীপালি দত্ত। পরিচালকদ্বয়ই বজ্রসেনের চরিত্র রূপায়িত করেছিলেন। অলক স্বীয় চরিত্রে সঠিক নাটকীয়তায় গেয়েছেন চমৎকার। সমবেত গানগুলি সঠিক মাত্রা পায়নি। শ্যামার চরিত্রে গান করা যে কোনও শিল্পীর কাছেই বেশ কঠিন। শুধু সুর তাল নয়, চরিত্রটির অন্তর্দ্বন্দ্ব, ছলনা সব কিছুই কণ্ঠের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা বেশ জরুরি। সুছন্দা ঘোষ এই দুরূহ কাজটি বেশ দক্ষতার সঙ্গেই করেছেন। তার সপ্তকে এক ধরনের তীক্ষ্নতা আসে যা অভিপ্রেত ছিল না। স্বরূপ পালের কোটাল নাট্যরসাসিক্ত। কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্তের উত্তীয় সুরে থাকলেও ভাবলেশহীন। সমগ্র নৃত্যাংশ বেশ দুর্বল। তারই মাঝে গার্গী নিয়োগি (শ্যামা) ও দীপ্তাংশু পাল (বজ্রসেন) উভয়ই চেষ্টা করেছেন, সাবলীল ভাবে উতরেও গেছেন।
হতাশ করেছেন প্রবীণ অসিত ভট্টাচার্য কোটালের চরিত্রে। |
|