এনডিএ-র ডাকা আজ, বৃহস্পতিবারের বনধে গরহাজির থাকলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের কোনও রকম ছুটি মঞ্জুর করা হবে না বলে মঙ্গলবারেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার বুধবার জানিয়ে দিয়েছে, বনধে গরহাজিরার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিকদেরও ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। গত ২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটের মতো এই বনধেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্তরের কর্মীদের উপস্থিত থাকতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় আজকের পরীক্ষাসূচিও বদলায়নি। স্কুল-কলেজগুলিতে অবশ্য এখন গরমের ছুটি চলছে।
২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটের মতো এ বারের বনধেও কঠোর মনোভাব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বনধে জনজীবন যাতে ব্যাহত না হয়, সেই জন্য সরকার সচেষ্ট বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। চিঠিতে জানানো হয়েছে, এ দিন কোনও সরকারি কর্মী অনুপস্থিত থাকলে তাঁর ছুটি মঞ্জুর করা হবে না।
ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটেও রাজ্য সরকারের তরফে এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। গরহাজির সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে ছুটি নামঞ্জুর এবং বেতন কাটা হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীদের ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। তার প্রথম কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা খাতাই নেই। দ্বিতীয় কারণ, শিক্ষকদের ছুটি নামঞ্জুর করার কোনও সংস্থানই নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে। এই সমস্যার কথা জানিয়ে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এখনও পর্যন্ত সেই চিঠির কোনও জবাব আসেনি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
তার মধ্যেই ফের একটি বনধ এসে পড়ল এবং একই রকম সরকারি নির্দেশিকাও জারি হল। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ বার কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন?
যাদবপুরের রেজিস্ট্রার প্রদীপকুমার ঘোষ বলেন, “সব স্তরে ওই নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপাচার্য এবং এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল নেবেন।” কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বাসব চৌধুরী বলেন, “সর্বত্র নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এর পরেও যদি কেউ অনুপস্থিত থাকেন, তা হলে আমরা আর কী করব!”
ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়েই আজ পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনে পরীক্ষা হবে বলে পরীক্ষা নিয়ামকেরা জানিয়ে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মালবিকা সরকার বুধবার বলেন, “আশা করি, জনজীবন ব্যাহত হবে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম নির্দিষ্ট সূচি মেনেই হবে।” সূচি অনুসারে পরীক্ষা হবে পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য আজকের পরীক্ষা বাতিল করেছে। কর্তৃপক্ষ জানান, বিএ, বিএসসি পার্ট ওয়ানের যে-সব পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, সেগুলি হবে ৯ জুন। পাঁচ বছরের এলএলবি পাঠ্যক্রমের পার্ট টু পরীক্ষা আজকের বদলে হবে ৯ জুন, পার্ট ফোর পরীক্ষা হবে ৫ জুন। বৃহস্পতিবারের পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়েছে রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও। তাদের ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে ১৩ জুন। |