|
|
|
|
‘অষ্টম গেমের আগে সারা রাত জেগে আমরা লড়েছিলাম’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বারো গেমের ম্যাচে সপ্তম গেমে গেলফাঁর কাছে হেরে পিছিয়ে যাওয়ার পরে আনন্দ ও তাঁর শিবির ম্যাচে ফেরার জন্য এতটাই মরিয়া ছিল যে সারা রাত কাজ করেছিলেন অন্যতম সেকেন্ড সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়। মস্কো থেকে ফোনে বুধবার রাতে সূর্য আনন্দবাজারকে বলছিলেন, “সাত নম্বর গেমে অবিশ্বাস্য ভাল দাবা খেলেছিল গেলফাঁ। হেরে বড় ধাক্কা খেয়েছিল আনন্দ। আমরা মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম গেলফাঁর চালগুলো দেখে। ঠিকই করা হয়েছিল পরের গেমেই অভাবনীয় কিছু করতে হবে। এখনও মনে আছে, সেই রাতে দশটা সাড়ে দশটা নাগাদ আনন্দ শুতে যাওয়ার পরে সারা রাত ধরে কাজ করেছিলাম আমরা চার জন সেকেন্ড। ভোরবেলা পৌনে পাঁচটা নাগাদ সকলের মনে হয়েছিল, আরও ফ্রেশ আইডিয়া দরকার। আমরা হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। ফিরে এসে আবার কাজ করেছিলাম। ভাগ্য ভাল, সেদিন গেলফাঁ আমাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছিল।”
টাইব্রেকারে এদিন সকাল থেকেই আনন্দ স্বাভাবিক ছিলেন বলে জানাচ্ছেন সূর্য। বলছেন, “ঠিক হয়েছিল টাইব্রেকারে খেলার হলে দু’জন সেকেন্ড প্রতিটা ম্যাচের পরে থাকতে পারবে খেলার হলে। আমি আর রাডিক ছিলাম হোটেলে, অনলাইনে বাকি দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলাম। আইডিয়া দিচ্ছিলাম ক্রমাগত।” টাইব্রেকারে প্রথম গেমেও আনন্দের জেতার সুযোগ ছিল বলে ধারণা সূর্যের। বলছিলেন, “প্রথম গেমে জেতার একটা সুযোগ হারায় আনন্দ। দ্বিতীয় গেমটায় অপ্রতিরোধ্য ছিল। কিন্তু মুশকিলটা হয় তৃতীয় গেমে।” নিজেই ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, “নিশ্চিত হার ছিল তৃতীয় গেমটায়। আনন্দের গুণ হল, হারছে দেখলে অসম্ভব দ্রুত চাল দিতে পারে। সেটাই করছিল ও। বাঘের মতো চাল দিয়ে যাচ্ছিল। এটাতেই এক সময় টাইম প্রেসারে পড়ে ভুল করল গেলফাঁ। ম্যাচটা ড্র হয়ে গেল।”আনন্দের সঙ্গে এই নিয়ে টানা তিনটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কাজ করলেন সূর্য, তিনটেতেই জয়ী। বলছিলেন, “ম্যাচ জেতার পরেও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েনি আনন্দ। ওকে বরং ভীষণ ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। আমি গর্বিত কাছ থেকে ওকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি বারবার। কোনও সন্দেহ নেই, আনন্দই ভাবতের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ। কারণ ১৮০টা দেশ দাবা খেলে।” |
|
|
|
|
|