নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সদ্য জাতীয় দলের সহ-অধিনায়কত্ব হারানো গৌতম গম্ভীর আইপিএল ফাইভে দেখিয়ে দিয়েছেন, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে তিনি ভালই জানেন। উলটো দিকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তাঁর বিশ্বস্ত ফর্মুলা আঁকড়ে অধিনায়কত্ব করেছেন আইপিএলে। যে ফর্মুলা তাঁকে বারবার সাফল্য এনে দিয়েছে।
মনোভাব: দু’জনের অধিনায়কত্ব তাঁদের নিজের নিজের ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন। এ বারের আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যেও ‘ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল’ থেকেছেন ধোনি। শেষ বলের ছক্কায় হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ জেতা বা বিরাট ব্যবধানে হার‘ক্যাপ্টেন কুল’ থেকেছেন আবেগহীন। ফাইনালে যাওয়ার আগে কী বলেছেন দলকে? “সিএসকে-তে আমরা জোর দিই মাঠে নেমে নিজেদের উপভোগ করার উপর। নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলার উপর। কে কী ভাবে খেলবে সেটা ক্রিকেটারদের বলায় আমি বিশ্বাস করি না। প্রত্যেক ক্রিকেটারের নিজস্ব একটা স্টাইল আছে।”
গম্ভীর আবার তেজি, লড়াকু মনোভাবের মানুষ। যার জন্য নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনে বহু বার ক্রিকেট কর্তাদের সঙ্গে ঝামেলা লেগেছে তাঁর। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে এ বার ইডেনে ১৩৫ তাড়া না করতে পারার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ফেটে পড়েছিলেন গম্ভীর। নিজের দলের ভঙ্গুর মিডল অর্ডারকে দুষতে পিছপা হননি। বিতর্কিত একটা ক্যাচ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মাহেলা জয়বর্ধনের সঙ্গেও। যে রকম ঘটনার সঙ্গে ধোনির নাম জড়ানো ভাবনার অতীত। ফাইনালের আগে গম্ভীর কী বলছেন? “যখন মাঠে নামি তখন কেউ কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে নামি না। নামি দলকে জেতাতে। তার জন্য যদি মাঠে আগ্রাসী হতে হয়, তো হব। এর জন্যই আমি ক্রিকেটটা খেলি। খেলায় অংশ নিতে নয়, জিতব বলে খেলি।”
ব্যাটিং: ধোনি আর গম্ভীর দু’জনের ব্যাটিং আর তাঁদের দুই টিমের ব্যাটিং যেন সমার্থক হয়ে গিয়েছে। লিগ পর্বে ধোনির ব্যাট চুপ থাকলেও প্লে অফে নিজের ছন্দে ফিরেছেন ধোনি। সুপার কিংসের পারফরম্যান্সও ঠিক তাই। লিগ পর্বে ম্যাড়ম্যাড়ে, প্লে অফে অপ্রতিরোধ্য।
গম্ভীর আবার টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানদের অন্যতম। আইপিএল ফাইভের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক। নিজের শেষ ১১ ইনিংসে মাত্র দু’বার ২৫ রানের নীচে আউট হয়েছেন নাইট অধিনায়ক। ঠিক যেমন কেকেআরের পারফরম্যান্স। ধারাবাহিক ভাবে লিগ টেবিলের উপরের দিকে থেকেছে নাইটরা।
টিমে বদল: অস্ট্রেলিয়া সফরে বিতর্কিত রোটেশন নীতি মেনে চললেও আইপিএলে সে সবের ধারেকাছে যাননি ধোনি। সিএসকে দলে সবচেয়ে বড় বদল বলতে শুরুর দিকে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পর মুরলী বিজয়কে বসানো। মাইক হাসি দলে যোগ দেওয়ার পর অবশ্য হাসি-মুরলীর বিশ্বস্ত ওপেনিং জুটিকেই খেলিয়ে গিয়েছেন ধোনি।
আইপিএলের পাঁচ বছরে নাইটদের গল্পটা সুপার কিংসের ঠিক উলটো। টানা তিন বছর প্লে অফে না উঠতে পেরে গম্ভীরের উপর লগ্নি করে কেকেআর কর্তৃপক্ষ। প্রথম বছর থেকেই ইনভেস্টমেন্টের রিটার্ন দিতে শুরু করেন গম্ভীর। তাঁর নেতৃত্বে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে ওঠে কেকেআর।
ধোনির মতো গম্ভীরও নির্দিষ্ট কিছু প্লেয়ারের উপর ভরসা রাখায় বিশ্বাস করেন। বারবার হোঁচট খেতে থাকা ইউসুফ পাঠানকে না বসানো যার প্রমাণ।
|