এক দিকে নর্দমার নোংরা জল জমে তৈরি হওয়া ডোবা। অন্য দিকে একটি সার-গাদা ও অস্থায়ী গোয়াল আর তার ঠিক মাঝে রয়েছে বীরনারায়ণপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এ রকম একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য দুবরাজপুর ব্লকের পারুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা আদিবাসী গ্রাম বীরনারায়ণপুরের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের প্রশ্ন, শিশু, গর্ভবতী ও প্রসূতিদের পুষ্টিকর খাবার যেখান থেকে দেওয়া হচ্ছে সেখানকার পরিবেশ এত অস্বাস্থ্যকর হবে কেন?
শুধু কী তাই? অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রটির জন্য একটি ঘর থাকলেও কোনও রান্নাঘর নেই। বাইরে খোলা জায়গায় রান্না হয়। ওই কেন্দ্রের কর্মী এবং এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত, সুসংহতশিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক এবং দুবরাজপুরের বিডিও-র নজরে আনা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ওই কেন্দ্রটির উপরে শিশু, গর্ভবতী ও প্রসূতি মিলিয়ে ৬৫ জন নির্ভরশীল। বছর তিনেক আগে ওই গ্রামের প্রথমিক স্কুলের গা ঘেঁষে তৈরি হয় অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রটির জন্য একটি ঘর। তার আগে প্রথমিক স্কুলের একটি ঘরেই কোনও ক্রমে চলত সেটি। নিজস্ব ঘর হওয়ার পর থেকে সমস্যা আরও বাড়েছে বলে অভিযোগ। |
বীরনারায়ণপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত। |
কিন্তু কী ভাবে? ওই কেন্দ্রের কর্মী মায়ারানি সাহা বলেন, “প্রাথমিক স্কুলের নলকূপ সংলগ্ন যে নিকাশি নালাটি রয়েছে সেটি সামান্যই পাকা এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আগেই শেষ। ফলে নলকূপ থেকে জল আমার কেন্দ্রের পাশে এসে জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গ্রামে জলকষ্ট থাকায় সকলেই বাধ্য হয়ে এই নলকূপটি ব্যবহার করেন। এতে আরও বেশি সমস্য হচ্ছে।” ওই কর্মীর অভিযোগ, “শুধু নর্দমার জল নয় সঙ্গে যোগ হয়েছে একটি সার-গাদা (যেখানে পল্ট্রির আবর্জনা জড়ো করা হয়) এবং গরু-মোষ বাঁধার জায়গা যেহেতু অন্যের তাই কিছু বলা যায় না। অথচ ভুগতে এই কেন্দ্রে আসা সকলকেই কেন্দ্রের রান্নাঘর ও সমস্যার ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধানকেও বলা হয়েছে। তবে ফল কিছু হয়নি।” গ্রামবাসী রঞ্জিত সরেন, বুড়ি হাঁসদা, রানি টুডুরাও বলেন, “কেন্দ্রের রান্নাঘর ও পরিবেশ ঠিক করতেই হবে। না হলে আমাদের বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।”
তবে সমস্যার কথা আদৌ তাঁরা জানতেন না বলে দাবি করেছেন দুবরাজপুরের সুসংহতশিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক বিপ্লব সেন এবং বিডিও গোবিন্দ দত্ত। উভয়েই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য দিকে, পারুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রবিলাল অঙ্কুর বলেন, “ইতিমধ্যেই ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির রান্নাঘর তৈরির জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। কাজ শুরু হবে। বাকি যে সমস্যা আছে সেগুলিকেও মিটিয়ে ফেলা হবে।” |