দুর্নীতির অভিযোগ উঠল ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার সুজিত সরকারের বিরুদ্ধে। আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম ইসিএলের সিএমডি রাজেশ সিংহের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি, ওই এরিয়ার গিরমিন্ট কোলিয়ারি এলাকার এক বাসিন্দাও কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানের কাছে সুজিতবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছেন। সুজিতবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে তাপসবাবু অভিযোগ করেছেন, শ্রীপুর এরিয়ার জিএম সুজিতবাবুর মদতে এলাকায় রমরমিয়ে চলছে অবৈধ খনি। পরিত্যক্ত শ্রীপুর কোলিয়ারির ‘হেড গিয়ার’ থেকে লোহার জিনিসপত্র, খনি এলাকার মূল্যবান গাছ অবৈধ ভাবে বিক্রি করে দেওয়াতেও তিনি মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এমনকী, বিধি-বহির্ভূত ভাবে দরপত্র ডেকে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী সুজিতবাবু বিক্রি করেছেন বলেও তাপসবাবু অভিযোগ করেছেন।
রবিউল ইসলামও অভিযোগ করেছেন, ওই কোলিয়ারির পরিত্যক্ত লোহা ১০ লক্ষ টাকায় মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করেছেন সুজিতবাবু। তাঁর আরও অভিযোগ, বারুদঘর লাগোয়া মূল্যবান শিশু গাছগুলি সুজিতবাবুর নির্দেশেই ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় অবৈধ ভাবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, ওই গাছ বা লোহা বিক্রি করার পরে নিজেকে বাঁচাতে প্রতি বারই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সুজিতবাবু। কী ভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির তদন্ত না করেই সুজিতবাবুর কথা মেনে নিলেন, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র পারিষদ। তিনি পুরো বিষয়টি তদন্ত করে ‘সরকারি সম্পত্তি লুঠ’ বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে।
তাপসবাবুরও দাবি, এই আধিকারিকের নেতৃত্বে এরিয়ার উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ইসিএলেরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এমনকী, বিভিন্ন সময়ে ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিক্ষোভও হয়েছে।
অন্য দিকে, গিরমিন্ট কোলিয়ারির বাসিন্দা জানকৃষাণবাবু সরাসরি কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন, সুজিতবাবু শ্রীপুর কোলিয়ারির ‘হেড গিয়ার’ থেকে বিভিন্ন সামগ্রী চুরি যাওয়ার কথা বললেও আদতে তিনি সেগুলি বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, সুজিতবাবুকে ওই কাজে মদত দিয়েছেন এরিয়ার এক নিরাপত্তা আধিকারিক। তাঁর মদতেই অবৈধ ভাবে তিনটি শিশু গাছ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই বাসিন্দার আরও অভিযোগ, নির্মাণকাজের সব কিছু দেখভালের দায়িত্ব সিভিল ইঞ্জিনিয়রের। কিন্তু ওই এরিয়ায় দরপত্র ডাকা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে তদারকি করেন জিএম নিজেই। তাঁর দাবি, বহিরাগত সংস্থাকে দিয়ে একটি লরি ও একটি গাড়ি সারানোর জন্য যথাক্রমে ৮৫ হাজার ও ৫৮ হাজার টাকার খরচ দেখানো হয়েছে। কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে তিনি অনুরোধ করেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুজিতবাবু যে ‘প্রয়োজনীয় সামগ্রী’ কেনার হিসেব দিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হোক। তাঁর দাবি, তা হলেই কারচুপি ধরা পড়ে যাবে।
সুজিতবাবুর অবশ্য দাবি, তিনি আসার পরেই ওই এরিয়ায় সব চুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জবাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।” ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নিলাদ্রী রায় বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।”
পুরভবনে সিসিটিভি। রানিগঞ্জ থানার ‘অতন্দ্র প্রকল্প’ চালু হল। প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন রাজ্যের আইন ও বিচার মন্ত্রী মলয় ঘটক। আসানসোল পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, রানিগঞ্জ থানা এলাকায় পুরভবন-সহ ষোলটি এলাকায় সিসিটিভি বসানো হয়েছে। এছাড়া তিনটি টাওয়ারের মধ্যে একটি রানিগঞ্জ থানায় বসানো হয়েছে। যার মাধ্যমে সারা শহরের ছবি থানা থেকেই দেখা যাবে। |