বন্যা হয়েছে দেড় দশক আগে। ওই সময় চাষের জমি কয়েক ফুট বালির আস্তরণে তলিয়ে যায়। শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ন্তী নদী সংলগ্ন বানিয়াডাবরি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা মরুভূমির চেহারা নেয়। বাধ্য হয়ে চাষিরা গ্রামের বাইরে দিনমজুরির কাজ শুরু করে। ভূমি সংরক্ষণ দফতর এক বছরের চেষ্টায় ওই বন্ধ্যা জমির উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে চাষিদের স্বস্তি এনে দিল। এ বার বছরের শুরু থেকে এলাকার ৫০টি পরিবার দিনমজুরির কাজ ছেড়ে নিজেদের জমিতে ফসল ফলানোর কাজ শুরু করেছে। ১৯৯৩ সালের বন্যায় জলে ভেসে আসা বালি জমে বানিয়াডাবরি গ্রামের প্রায় ১০০ বিঘা জমি নষ্ট হয়। টানা কয়েক বছর থেকে ওই পরিস্থিতি চলতে থাকায় স্থানীয় চাষিরা কাজের খোঁজে বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। দুর্দশার খবর পেয়ে ২০১১ সালে ভূমি সংরক্ষণ (কৃষি) দফতরের আধিকারিকরা গ্রাম ঘুরে দেখে বন্ধ্যা হয়ে যাওয়া জমির উর্বরতা শক্তি ফেরানোর কাজ শুরু করেন। কয়েক মাসের চেষ্টায় সফলতা পেয়ে যান তাঁরা। দফতরের সহকারি আধিকারিক বৃন্দাবনচন্দ্র রায় জানান, উর্বরা শক্তি ফেরাতে ভূমি সংরক্ষণ (কৃষি) দফতরের তরফে জমির চারধারে বাঁশের পাইলিং দিয়ে উঁচু বাঁধ দেওয়া হয়। আল দিয়ে জমিকে ছোট ছোট ভাগ করে বালির আস্তরণ সরিয়ে জল ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়। এর পর থেকে এতদিন বন্ধ্যা হয়ে পড়ে থাকা জমি উর্বরতা শক্তি ফিরে পেতে শুরু করে। দ্রুত ফসল উৎপাদনের জন্য জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়। মরুভূমির মতো হয়ে যাওয়া জমি উর্বরতা ফিরে পাওয়ায় এলাকার চাষিরা খুশি। এখন ওঁরা দিনমজুরি ছেড়ে ফের আগের মতো নিজের খেতে ফসল ফলানোর কাজে ব্যস্ত হয়েছেন। বিশ্বাস নার্জিনারি, সামু সোরেন, নিরাশ নার্জিনারির মতো স্থানীয় চাষিরা বলেন, “১৭ বছর হয়েছে নিজের জমি চাষ করতে পারিনি। গ্রামের বাইরে অন্যের জমিতে দিনমজুরি খেটে সংসার চালাতে হয়েছে। ভাবতে পারিনি হারানো জমি ফিরে পাব।” শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাহাবিয়াম কিস্কু। তিনি বলেন, “চাষিদের এখন আর গ্রামের বাসিন্দাদের বাইরে যেতে হচ্ছে না।” |