|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
বর্ষসেরা গোড়ায় গলদ |
বইপোকা |
সাহিত্যের পাকা জহুরির কাল গত হইয়াছে। জহুরিতে প্রয়োজন নাই, এক্ষণে কাণ্ডজ্ঞান চাই। তাহার অভাব যে কী নিদারুণ হইয়া উঠিতে পারে তাহা দেখাইল সরলা দেবী চৌধুরাণীর রচনা সংকলন (সংকলন ও সম্পাদনা ড. শঙ্করপ্রসাদ চক্রবর্তী, দে’জ)। সংকলক ইহাতে ‘অনাথবন্ধু’ নামে একটি রচনা সংকলিত করিয়াছেন। পৃষ্ঠা সাতেকের রচনাটি উপন্যাস হিসাবে স্থান পাইয়াছে। সম্পাদকীয় বলিতেছে, ‘সরলাদেবীর ‘অনাথবন্ধু’ উপন্যাসটি উপন্যাসের গুণাবলীতে সমৃদ্ধ নয়। কিন্তু লেখিকা এটিকে ‘উপন্যাস’ বলেছেন। আমরা এটিকে উপন্যাস হিসাবেই গ্রহণ করছি (যদিও এই নিয়ে বিতর্ক হতে পারে)। ভারতী জ্যৈষ্ঠ ১৩০৫ সনে এটি প্রকাশিত হয়।’ অথচ সাহিত্যবোধে শিশুপ্রতিমও কেহ রচনাটির প্রথম লাইন পড়িয়াই বলিয়া দিবে, ইহা উপন্যাস নহে, উপন্যাসের সমালোচনা। মূল উপন্যাসটি ৩৬ পরিচ্ছেদের, অনামা লেখকের। ‘ভারতী’র জ্যৈষ্ঠ ১৩০৪ (১৩০৫ নহে) সংখ্যায় তাহার সমালোচনা করেন সরলা দেবী। সে কালে সমালোচনার শীর্ষক সমালোচ্যের নামে হইত, তারকাচিহ্ন দিয়া পাদটীকায় গ্রন্থ সম্পর্কে লেখা থাকিত। সেই স্থলে ‘উপন্যাস’ শব্দটি দেখিয়াই অন্ধের হস্তীদর্শন ঘটিয়াছে। সুনীল দাশের ভারতী: ইতিহাস ও রচনাপঞ্জি-তে আবার রচনাটি ‘গল্প’। উপন্যাসের সমালোচনাকে উপন্যাস বলিবার এই নিদর্শন মহাবিস্ময় হইয়া থাকিবে। পুরস্কার লইয়া ধুমধামের এই মরশুমে বরং নূতন এক পুরস্কার প্রবর্তিত হউক, ‘বর্ষসেরা গোড়ায় গলদ’, প্রথম প্রাপক নিঃসন্দেহে হইবে আলোচ্য সংকলনটি। |
|
|
|
|
|