|
|
|
|
মিলল জমি, রাস্তা তৈরিতে জটিলতা কাটল খানাকুলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
ফুটবল মাঠের মাঝখান দিয়ে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনায় আপত্তি তুলেছিলেন এলাকার মানুষ। ফলে, বছর দুয়েক আরামবাগের গৌরহাটি থেকে খানাকুল-১ ব্লকের রাধানগর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় ৭০০ মিটারের কাজ থমকে ছিল। অবশেষে, বুধবার এক চাষি প্রয়োজনীয় জমি দিতে রাজি হওয়ায় আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই এবং বিধায়ক তৃণমূলের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার যৌথ উদ্যোগে নকশায় পরিবর্তন করে মাঠের পাশ দিয়ে ওই রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ফলে, কাটল রাস্তা তৈরি নিয়ে জটিলতা।
বুধবার বিকেলে এলাকার চাষিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বিডিও, স্থানীয় বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান-সহ প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মাঠের পাশ দিয়ে তৈরি হবে ওই ৭০০ মিটার রাস্তা। তার জন্য প্রয়োজন দু’-আড়াই কাঠা জমি। পঞ্চানন মণ্ডল নামে এক চাষি ওই জমি দিতে রাজি হয়ে যাওয়ায় রাস্তা তৈরি নিয়ে জট কাটে। বিডিও বলেন, “রাস্তাটি হলে দু’টি ব্লকের মধ্যে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। বন্যার সময় আরামবাগ মহকুমা দফতর থেকে খুব সহজেই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছনো যাবে খানাকুল এবং আরামবাগের দুর্গম এলাকাগুলিতে।” বিধায়ক বলেন, “জোর-জবরদস্তিতে আমরা বিশ্বাস করি না। উন্নয়নের কথা বোঝানোয় চাষি স্বেচ্ছায় জমি দিতে আগ্রহী হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে রাস্তাটি হচ্ছে। রাস্তা দু’পাশে প্রায় ১০-১২টি গ্রাম পড়ছে। দু’টি ব্লকের মধ্যে সংযোগের ক্ষেত্রে রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মানছেন এলাকার মানুষ এবং প্রশাসনের কর্তারাও। কিন্তু আরামবাগের গৌরহাটি-২ পঞ্চায়েত এলাকায় বেহালা বাজারের কাছে ফুটবল মাঠের মাঝখান দিয়ে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হওয়ায় আপত্তি তোলেন কৃষ্ণবাটি, বেহালা বাজার, গৌরহাটি-সহ ৫-৬টি গ্রামের লোক।
প্রসঙ্গত, বেহালা বাজারের কাছে ওই ফুটবল মাঠটি যে সব চাষির দান করা জমিতে তৈরি হয়েছে, তাঁদের মধ্যে পঞ্চানন মণ্ডলও রয়েছেন। নতুন করে জমি দানের ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বিঘা দুয়েক জমি সম্বল করে সংসার চালাই। মাঠের জন্য আগে কয়েক কাঠা জমি দিয়েছিলাম। রাস্তা ঘুরিয়ে করতে আরও কয়েক কাঠা জমি চলে যাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু রাস্তাটি শেষ হলে জমির দাম বাড়বে। তখন রাস্তার পাশের কিছু জমি বিক্রি করে অন্যত্র জমি কেনার চেষ্টা করব।” গৌরহাটি-২ পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক শুভ্রজ্যোতি মণ্ডল বলেন, “দিন পনেরোর মধ্যে থমকে থাকা কাজ শুরু হবে। রাস্তার বাকি অংশের কাজ প্রায় শেষের দিকে।” নকশা বদলের জন্য মাঠের পাশের অংশে রাস্তায় একটু বেশি বাঁক হচ্ছে বলে তিনি জানান। পঞ্চায়েত প্রধান স্বপন মোদকের আশা, রাস্তাটি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। চাষিরা ফসল নিয়ে সহজেই আরামবাগ এবং খানাকুলের বাজারে যেতে পারবেন। |
|
|
|
|
|