|
|
|
|
আডবাণী-সুষমা সভায় নেই, কেটে গেল ঐক্যের সুর |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • মুম্বই |
দুর্নীতি-মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মনমোহন সিংহ-সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন করা তো দূর, কর্মসমিতির বৈঠকের শেষ দিনেও দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা তুলে ধরতেই ব্যস্ত রইল বিজেপি। অথচ কর্মসমিতির বৈঠকের শেষে প্রকাশ্য জনসভাতে আজ হাজির রইলেন না দলের শীর্ষ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী ও লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ।
বৈঠকের আগে দল জেরবার ছিল নরেন্দ্র মোদী, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া ও ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে। বসুন্ধরাকে আগেই বুঝিয়ে বৈঠকে নিয়ে এসেছিল দল। সঞ্জয় জোশীর ইস্তফা নিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নরেন্দ্র মোদীকেও শেষ পর্যন্ত বৈঠকে হাজির করাতে সক্ষম হন দলের নেতৃত্ব। বাকি ছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। যিনি প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন, মুম্বইয়ের বৈঠকে আসবেন না। কিন্তু শেষ দিনে তাঁকেও হাজির করে ঐক্যের ছবিটা দেখাতে চেয়েছিলেন নিতিন গডকড়ী। কিন্তু সুর কাটল আডবাণী ও সুষমার অনুপস্থিতিতে।
আডবাণী যে এই সভায় যোগ দেবেন না, তা আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন দলকে। সুষমাও বলেন, “আগামিকাল সকালে গাজিয়াবাদে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা এক মাস আগে থেকে। আমাকে তাই দিল্লি ফিরতেই হবে।” দলে তবু প্রশ্ন উঠেছে, সভায় অনুপস্থিত থেকে কী বার্তা দিতে চাইছেন এই নেতারা? বিশেষ করে এই নেতারাই যখন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংগঠিত ভাবে আন্দোলন করার কথা বলছেন। খোদ আডবাণী প্রশ্ন তুলছেন দলের অন্দরের দুর্বলতা নিয়ে, সুষমা বলছেন সংসদীয় ও সংগঠনের নেতাদের মধ্যে আরও সমন্বয় বাড়ানোর কথা। নেতাদের দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য অরুণ জেটলিকে তো কার্যত দেখা যাচ্ছে ‘সঙ্কটমোচক’-এর ভূমিকায়।
প্রশ্ন উঠছে আরও। গত কাল সভাপতি পদে গডকড়ীর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাশের সময় আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। গডকড়ীর প্রবল প্রতিপক্ষ গোপীনাথ মুন্ডেও তখন গরহাজির। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়েও আজ সারা দিন হিমশিম খেয়েছেন বিজেপি নেতারা। রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আডবাণীজি এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে গিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই সময়ই প্রস্তাবটি পাশ হয়। আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করেই আডবাণী ফের ফিরে আসেন। এর মধ্যে অসন্তোষের কোনও বিষয় নেই। সভাপতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি এর আগে দিল্লিতে দলের পদাধিকারীদের বৈঠকেই অনুমোদিত হয়েছিল।” কিন্তু ঘটনা হল, সেই বৈঠকেও কিন্তু অনুপস্থিত ছিলেন আডবাণী। নিজের অসুস্থতার কারণে।
বিজেপি সূত্রের মতে, আরএসএস যে ভাবে গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে, সেটাও ভাল চোখে নিচ্ছেন না দলের অনেক নেতা। সভাপতি পদে গডকড়ীর মেয়াদ বাড়ানোর জন্যই গত কাল সঙ্ঘ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সমঝোতা করা হয়েছে মোদীর সঙ্গে। তার জন্য ইস্তফা নেওয়া হয়েছে সঞ্জয় জোশীর। মোদীর দাবি মেনে এখনও কিন্তু তাঁকে পুরোপুরি বর্জন করেননি সঙ্ঘের আশীর্বাদধন্য গডকড়ী। বরং আগামী লোকসভা নির্বাচনে গডকড়ী যে নাগপুর থেকে লড়ার কথা বলেছেন, সেখানে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব এই সঞ্জয় জোশীকেই দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। |
|
|
|
|
|