|
|
|
|
‘পুবে তাকাও’ মেনেই মায়ানমার সফরে মনমোহন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সিকি শতাব্দী পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিমান ছুঁতে চলেছে মায়ানমারের টারম্যাক। ২৭ তারিখ এক বিরাট বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল নিয়ে তিন দিনের সফরে নেপিদও পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। শেষ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বর মাসে সে দেশে গিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, কূটনীতির প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখছে সাউথ ব্লক। ঘরোয়া ভাবে এ কথাও মেনে নেওয়া হচ্ছে যে দীর্ঘদিন মায়ানমারকে অগ্রাধিকার না দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি। পারস্পরিক আস্থার ক্ষেত্রে ফাঁক থেকে গিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ‘পুবে তাকাও’ নীতির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে এখন মায়ানমারের গুরুত্ব নয়াদিল্লির কাছে সব চেয়ে বেশি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ গড়ে তুলতে হলে নেপিদওকে পাশে পাওয়া ভারতের পক্ষে জরুরি। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের ‘অবহেলার’ কারণে বেজিং মায়ানমারে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে ফেলেছে। এই বিষয়টি সাউথ ব্লকের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মায়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিকে জোর দিচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক।
কেন এই সময়টিকেই বেছে নেওয়া হল প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য? বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাইয়ের বক্তব্য, “এমন এক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সফর হচ্ছে যখন মায়ানমার দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলেছে।” সে দেশে সাম্প্রতিক ভোটের পর সামরিক শাসন শেষ হয়নি। কিন্তু গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সাং সু চি-র জয়ে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে বলে মনে করছে ভারত। স্থির হয়েছে, মায়ানমারের নতুন সাংসদরা ভারতে আসবেন জুলাই থেকে। সংসদে তাঁদের গণতন্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এক কূটনীতিকের মতে, “সে দেশের সামরিক শাসন চলাকালীন অনিশ্চিত পরিস্থিতি, পরিকাঠামোর অভাব ইত্যাদি কারণে ভারতীয় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি মায়ানমারের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিল। তবে সেখানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ পাল্টাচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, “আমাদের চেষ্টা হবে, গণতন্ত্রের দিকে পা ফেলা মায়ানমারের পাশে থাকা। সেই সঙ্গে ভারতের জন্য যতটা সম্ভব সুবিধে
আদায় করা।” মাথাই আজ জানিয়েছেন, “গত বছর মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট থান সুই-এর ভারত সফরের সময়ই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এক নতুন ভিত তৈরি হয়েছিল। তাকে কাজে লাগিয়ে সুবিধেজনক কূটনৈতিক অবস্থানে পৌঁছতে
চাই আমরা।”
প্রধানমন্ত্রীর সফরে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা এবং চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা, পরিকাঠামো, যোগাযোগ, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ। প্রধানমন্ত্রী ইয়াঙ্গনে সু চি-র সঙ্গেও বৈঠক করবেন। |
|
|
|
|
|