সাত সকালেই শুরু হয়ে যায় নেশার আসর। কোথাও নির্মীয়মাণ ভবনের ভেতরে, কোথাও ফ্ল্যাট বাড়িতে চার পাঁচজনের দল বসায় নেশার আসর। সন্ধ্যা হলেই, স্কুলের মাঠে, বিভিন্ন গলিতে জমে ওঠে নেশার আসর। প্রধাননগর, গুরুঙ্গবস্তি, চম্পাসারি, জংশন এলাকায় গেলেই সে চিত্র ধরা পড়ে। নেশার প্রকোপ ঠেকাতে নাজেহাল পুলিশও। গত এক মাসে প্রধাননগর থানায় নেশা সংক্রান্ত ১১টি মামলা হয়েছে। ৫টি মদের ঠেকে হানা দেওয়ার, ৫টি গাঁজা এবং ১টি ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিক আইনে মামলা করা হয়েছে। অন্তত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “নেশার প্রকোপ ঠেকাতে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সফলতা এসেছে। আমরা ওই এলাকাগুলিতে নজরদারি বজায় রেখেছি। কাশির সিরাপ সহ এমন কিছু নেশার জিনিস আছে যা নিয়ে সরাসরি কিছু বলা যায় না। তার পরেও দেখা হচ্ছে কি করে এটা কমানো যায়।” সিপিএমের শিলিগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুকুল সেনগুপ্ত পুলিশকে আরও তৎপর হওয়ার আবেদন করেছে। তিনি বলেন, “স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের মধ্যে নেশার প্রকোপ বেড়েছে। বিভিন্ন দোকানে নেশার জিনিস বিক্রি করা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দারা অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। পুলিশকে সব জানিয়েছি। আরও তৎপরতার সঙ্গে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে প্রধাননগরের নিবেদিতা রোডে মার্গারেট স্কুলের মাঠে নেশা করছিল দুই কিশোর। সেই সময় স্থানীয় যুবক রাজীব দাস তাঁদের ভৎসনা করেন। তার জেরে রবিবার রণক্ষেত্রে হয়ে ওঠে প্রধাননগর। ৩ জন জখম হন। একটি মোটরবাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসের পাশে নেশার ওষুধের কারবার রয়েছে বলে অভিযোগ। ওই এলাকার কিছু দোকানে নেশার জিনিস মেলে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাশির সিরাপ, এক ধরণের ট্যাবলেট, গাঁজা বিক্রিও প্রায় অবাধে চলছে। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “নেশা করার বিভিন্ন এলাকায় হট্টগোল হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে মারামারিও করছে তারা। সব ঘটনা থানা পর্যন্ত যাচ্ছে না। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে কি হয় তা শনিবারের ঘটনাতেই পরিষ্কার।” |