সংস্থার ‘প্যাড’ কীভাবে একটি বাম মনোভাবাপন্ন সংগঠনের প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিলেন ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের (বিএসএনএল) কর্তৃপক্ষ। সোমবার সংস্থার শিলিগুড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলারেল ম্যানেজার অরুময় ডাকুয়া ওই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গত শনিবার বামফ্রন্টের ডাকে দীনবন্ধু মঞ্চে শিলিগুড়ি পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে একটি নাগরিক কনভেনশন হয়। সেখানে সিপিএম প্রভাবিত প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের কমিটি গঠনের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আবেদনপত্র বিলি করা হয়। মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক তথা সিপিএম নেতা বিপুলেন্দু চক্রবর্তী ওই আবেদনপত্র বিলি করেন। অভিযোগ, বিএসএনএলের প্যাডের পিছনের ফাঁকা অংশে ওই আবেদনপত্রটি ছাপানো হয়। তা বিলি হতেই কনভেনশনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়। দলের কয়েকজন নেতা তা দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে তা জেলা নেতৃত্বকে জানান। তার পরেই বিলি করা কিছু কপি ফেরৎ নিয়ে তা বদল করা হয়। দলের তরফে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয় ওই প্রবীণ নেতাকে। ইতিমধ্যে এই খবর পৌঁছায় বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের কাছে। তার পরেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার বলেন, “বিষয়টি উদ্বেগের। প্যাডের কাগজ এই ভাবে বাইরে চলে যাওয়ার কথা নয়। তা রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের ঘটনা বেআইনি। বিশদে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ঘটনাচক্রে, বিপুলেন্দুবাবু বিএসএনএলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি সংস্থার বামপন্থী সংগঠনের নেতৃত্বেও ছিলেন। তবে বিপুলেন্দুবাবু বলেন, “আমার মত প্রবীণ বাসিন্দাকে সামান্য কারণে হয়রান করা হচ্ছে। আমি বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলতে চাই না।” সংস্থা সূত্রের খবর, প্রয়োজনে ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হতে পারে। বিপুলবাবু যে আবেদনপত্রটি বিলি করছিলেন তাতে সাধারণত ‘সেলওয়ান’ মোবাইলের বিল ছাপানো হয়ে থাকে। সংস্থার কয়েকজন অফিসার জানান, দফতরের চাকরির সূত্রে অনেক সময়ই সংস্থার ‘লোগো’ ছাপানো প্যাড বা কাগজ অনেকের কাছেই থাকে। দফতরের নানা কাজেই সেগুলি ব্যবহার করা হয়। তবে বাড়ির বা কোনও সংগঠনের কাজে তা ব্যবহার করা হয়নি। বিপুলেন্দুবাবুরা সংস্থার যে প্যাডটি ব্যবহার করেছেন তা মূলত সংস্থার মোবাইল বিল প্রিন্ট করার কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া প্রতিটি বিভাগে চিঠিপত্র-সহ নানা লেখালেখির কাজও করা হয়। সংস্থা সূত্রের খবর, মোবাইল, বিল, রক্ষনাবেক্ষণ-সহ একাধিক বিভাগ থেকে প্রয়োজনমত ওই ‘প্যাড’ এসডিই-কে (জি) স্বপ্না রায়কে সরবরাহ করার আবেদন জানানো হয়। এজিএম বা ডিজিএম পদমর্যাদার অফিসারের অনুমোদনের পর তা সংস্থার নির্ধারিত ‘ভেন্ডারে’র কাছ থেকে আনানো হয়। পরবর্তীকালে তা বিভাগগুলিতে পাঠানো হয়। বিলের কাউন্টার না কোনও বিভাগ থেকে ওই কাগজ বাইরে বার হল তা খতিয়ে দেখছেন সংস্থার আধিকারিকেরা। |