|
|
|
|
বিড়ম্বনা প্রাক্তন উপাচার্যের |
শীর্ষ পদ শূন্য, রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ‘অনাথ’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্তু সহ-উপাচার্যের কোনও পদই নেই! আর উপাচার্য-পদে অশোকরঞ্জন ঠাকুরের কার্যকাল শেষ হয়ে গিয়েছে গত ২০ মে, রবিবার। তাঁর পরে কে ওই পদে বসবেন, রাজ্যের নতুন সরকার সেই বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ জারি করেনি। বাড়ানো হয়নি অশোকরঞ্জনবাবুর কার্যকালও। কাজেই পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান পরিচালকের পদ এখন খালি। ওই বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত অভিভাবকহীন। রাজ্যের উচ্চশিক্ষার ইতিহাসে এমন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন।
নতুন সরকার আসার পরে রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদ খালি হয়েছে। কলকাতা, যাদবপুর, বর্ধমান-সহ সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটিতেই অস্থায়ী ভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সেখানে অস্থায়ী ভাবেও কোনও উপাচার্যের নাম ঘোষণা করেনি সরকার।
রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তিনি কী করবেন, তা জানতে চেয়ে অশোকরঞ্জনবাবু আচার্য-রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আচার্য তাঁকে সোমবারেও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন। তাই অশোকরঞ্জনবাবু এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বেলা প্রায় আড়াইটে পর্যন্ত সরকারের তরফে তাঁর সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা হয়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর পরে অশোকরঞ্জনবাবু রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরে একটি চিঠিও পাঠান। কিন্তু পরবর্তী উপাচার্য সম্পর্কে সরকারের তরফে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। এমনকী উপাচার্য-পদে তাঁর মেয়াদ বাড়ছে কি না, সেটাও জানানো হয়নি অশোকরঞ্জনবাবুকে। তার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যান তিনি। তবে অশোকরঞ্জনবাবু এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তারা তো বিষয়টি জানেন। ওঁরা নিশ্চয়ই কোনও ব্যবস্থা করবেন।”
কিন্তু উপাচার্যের কার্যকাল যে ২০ মে শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেটা তো অনেক আগে থেকেই জানা ছিল। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার সময়মতো পরবর্তী উপাচার্য ঠিক করেনি কেন?
উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পরবর্তী উপাচার্যের নাম স্থির হয়ে গিয়েছে। তবে সেই সংক্রান্ত ফাইল এখনও রাজভবন থেকে উচ্চশিক্ষা দফতরে পৌঁছয়নি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন বলেন, “দু’-এক দিনের মধ্যেই নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেবেন। তার আগে, এত অল্প সময়ের জন্য উপাচার্যের পদ ফাঁকা থাকলেও কোনও ক্ষতি হয় না।”
তা হলে অশোকরঞ্জনবাবুকে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলা হল কেন? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এটা আমার জানা নেই। এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”
রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিনের ঘটনায় কিছুটা বিভ্রান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ ঘোড়ুই বলেন, “অশোকরঞ্জনবাবুকে কেন আসতে বলা হল, বুঝলাম না। এটা ওঁর পক্ষে যেমন বিড়ম্বনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষেও খুব একটা সম্মানের নয়। গোটা বিষয়টি জানিয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।” |
|
|
|
|
|