|
|
|
|
এক বছরেও হাল ফেরেনি কর্মীদের, ক্ষোভ মহাকরণে |
রঞ্জন সেনগুপ্ত • কলকাতা |
রাজ্যে সরকার বদলের এক বছরে মহাকরণ অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী রইল। কিন্তু দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারি কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমিত হল না।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের উপেক্ষিত দাবি বিবেচনা করে আশু পদক্ষেপ করার আশ্বাস ছিল তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারে। ভোটের আগে একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমে দলের নেত্রী বলেছিলেন, কর্মীদের দাবি যথার্থ হলে তার জন্য কোনও আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। নজরে আনলেই হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া সেই সব প্রতিশ্রুতি সরকারের এক বছর সময়কালেও পূরণ হয়নি বলে বর্ষপূর্তির মুখে অভিযোগ করেছেন কর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, শুধু নজরে আনা নয়, আন্দোলন করেও প্রতিশ্রুতি আদায় করা যায়নি।
গত বছরের ২০ মে ক্ষমতায় এসে তিন দিনের মধ্যে সরকারি কর্মী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে বলেছিলেন, প্রতি তিন মাস অন্তর এই ধরনের বৈঠক হবে। কথা রেখেছিলেন তিনি। পরবর্তী বৈঠক হয়েছিল অগস্ট মাসে। কিন্তু প্রথম বর্ষপূর্তির আগে পর্যন্ত গত প্রায় ন’মাসে আর কোনও বৈঠক করেননি তিনি। ফলে এই সময়ের মধ্যে জমে ওঠা অভিযোগ বিক্ষোভ-আন্দোলনের চেহারা নিয়ে হাজির হচ্ছে সরকারি দফতরে।
কর্মীদের মূল অভিযোগ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে। সাধারণ ভাবে বছরে দু’বার ডিএ দেওয়ার কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গত নভেম্বরে এক কিস্তি (১০%) ডিএ ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ব্যবধান কিছুটা কমায় (১৩%)। কিন্তু কেন্দ্র তাদের কর্মীদের জন্য ফের এক কিস্তি ডিএ (৭%) ঘোষণা করায় এখন সেই ব্যবধান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০%।
অর্থ দফতর সূত্রে খবর, বেতন-পেনশন দিতে হিমসিম সরকার এখনই কোনও ডিএ দেওয়ার কথা ভাবছে না। আইএনটিইউসি অনুমোদিত কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের যুগ্ম সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, কেন্দ্রের সঙ্গে আরও ২১টি রাজ্যও এক কিস্তি ডিএ দিয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের মাসিক বেতনে কয়েক হাজার টাকার পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে। ডিএ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে অন্য কর্মী সংগঠনেরও। দাবিদাওয়া নিয়ে আগামী দিনে আন্দোলনের পথে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ওই সংগঠন। মলয়বাবুদের সংগঠন শুরু না করলেও মূলত ডিএ-র দাবিতে সোমবার কর্মী সংগঠন ইউনিটি ফোরামের পক্ষ থেকে অর্থ দফতরের সামনে আমরণ অনশন শুরু হয়েছে। তবে মমতার শাসনে ভোল বদলেছে মহাকরণের। বাহারি আলো, রং আর সুদৃশ্য আসবাবে সেজেছে মন্ত্রী ও আমলাদের ঘর। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সামনে ‘সংরক্ষিত’ এলাকাও নতুন আঙ্গিকে আরও ঝাঁ-চকচকে হয়েছে। যদিও টানাটানির সংসারে এই বাহুল্য ঠিক কতটা প্রয়োজন, তা নিয়েও ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। |
|
|
|
|
|