|
|
|
|
বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ, মমতাকে ‘বার্তা’ বিজেপির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মমতা-সরকারের বিরুদ্ধে ‘চার্জশিট’ পেশ করতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে ‘সাহায্য’-এর হাত বাড়িয়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ তথা দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ! প্রতিশ্রুতি দিলেন ঋণগ্রস্ত পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জন্য তৃণমূল সাংসদরা সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ চাইলে বিজেপি তাঁদের ওই দাবি সমর্থন করবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের শরিক মমতার প্রতি এনডিএ-র বড় শরিক বিজেপি-র প্রথম সারির এক নেতার ওই আশ্বাস যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
মমতা-সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি হয়েছে রবিবার। সেই উপলক্ষে সোমবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জনসভা করে সরকারের এক বছরের কাজের মূল্যায়ন করে বিজেপি। ওই সভায় রাজনাথ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একটি ‘চার্জশিট’ পেশ করে তাদের সমালোচনা করেন। কিন্তু পাশাপাশি তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গকে দু’ লক্ষ কোটি টাকার দেনায় ডুবিয়ে রেখে গিয়েছে। তার উপরে সুদ দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের নাভিশ্বাস উঠছে। এই অবস্থায় রাজ্যের উন্নয়নের লক্ষ্যে আপনি (মমতা) কেন্দ্রের কাছে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ চাইছেন। তৃণমূল সাংসদরা ওই দাবিতে সংসদে সরব হলে বিজেপি তাঁদের সমর্থন করবে।” |
|
জনসভায় বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। — নিজস্ব চিত্র |
রাজনাথের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের ফের জোটের সম্ভাবনা আছে কি? সরাসরি প্রশ্ন করা হলে রাজনাথ বলেন, “আমরা শুধুমাত্র বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবিতে তৃণমূলকে সমর্থন করব। অন্য কিছুতে নয়। মমতাজি এখন কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন। ভবিষ্যতে কী হবে, তা ভবিষ্যতই বলবে।”
রাজ্যে ২৬ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে। বিজেপি-র মতো হিন্দুত্ববাদী দলের সঙ্গে জোট গড়ে মুসলিম মন হারানোর ঝুঁকি মমতার নেওয়ার কথা নয়। সে ক্ষেত্রে রাজনাথ মমতার প্রতি ওই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ বার্তা’ দিলেন কেন? বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের দাবি, “পশ্চিমবঙ্গের জনগণের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই রাজনাথজির ওই বার্তা।” তবে বিজেপি-র অন্দরের খবর, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে মমতা যাতে সমর্থন করেন, তাই রাজনাথের ওই ‘কৌশল’। আগামী লোকসভা নির্বাচনে তাদের নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটই ক্ষমতায় আসবে বলে বিজেপি আশাবাদী। তখন মমতার সমর্থন দরকার হলে যাতে তা পাওয়া যায়, তার জন্যও এখন থেকে রাজনাথের ওই উদ্যোগ বলে দলের একাংশের ব্যাখ্যা।
বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের প্রশ্নে সমর্থনটুকু ছাড়া এ দিন বিজেপি-র সভার বাকি সবটাই ছিল তৃণমূলের প্রতি সমালোচনামূলক। রাজনাথ ছাড়াও সভায় ছিলেন বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তপন সিকদার, তথাগত রায়, সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্তমান সভাপতি রাহুল সিন্হা, দলের সাধারণ সম্পাদক শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ প্রমুখ। সকলেই বিভিন্ন প্রশ্নে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। সভায় ভাল ভিড় হয়েছিলএই মর্মে টুইটও করেন তথাগতবাবু। অন্য দিকে, এ দিনই রাজ্য সরকার সম্পর্কে পিডিএস-ও মূল্যায়ন করেছে ‘এ পর্যন্ত এমন কোনও ভাল কাজ হয়নি, যা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে।’ এই প্রেক্ষিতে জনজীবনের বিভিন্ন দাবিতে ১৯ জুন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করবে পিডিএস। |
|
|
|
|
|