অভাবকে জয় করেই স্বপ্নপূরণ
দুবেলা বিড়ি বেঁধে বাবাকে সংসার চালাতে সাহায্য করে দুই বোন। আর তারপর রাত জেগে চলে পড়াশোনা। এর মধ্যেই একজন স্বপ্ন দেখে চিকিৎসক হওয়ার আর অন্যজন হতে চায় অধ্যাপক। জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাইমাদ্রাসার দুই ছাত্রী রেখা খাতুন ও সেতারা খাতুন এ ভাবে লেখাপড়া করেই ৬৬৬ ও ৬৩৬ পেয়েছে হাইমাদ্রাসা পরীক্ষায়।
হাইমাদ্রাসা থেকে মাইলখানেক দূরে জয়রামপুর মণ্ডলপাড়ায় বাড়ি তাদের। বাবা হোসেন আলি পেশায় রাজমিস্ত্রী। পরীক্ষার ফল বেরোনোর পর থেকেই এলাকায় যেন উৎসবের মেজাজ। সোমবার সারা দিন ধরেই কেউ মিষ্টি, কেউ কেক নিয়ে আসছেন ভগ্নপ্রায় বাড়িটার এক চিলতে ঘরে। সেই ঘরেই থাকা, খাওয়া, শোওয়া সব করতে হয় তাঁদের। রেখা, সেতারার মা সাইনারা বিবি বলেন, “পরীক্ষার ফলের চিন্তায় মেয়েদের তো সকাল থেকেই নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। আমারও মন বসছিল না রান্নায়। স্বামীকে বলেছিলাম আজ কাজে না যেতে। হঠাৎ দুপুরে মেয়েদের এক শিক্ষক নুর আলম এসে জানালেন খবরটা।”
সিতারা ও রেখা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
বাবার রোজগারে সংসার না চলায় ছোট বেলা থেকেই দু’বোনকে শিখতে হয়েছিল বিড়ি বাঁধা। রেখার কথায়, “স্কুলের ফাঁকে দুজনে মিলে প্রতিদিনই গড়ে হাজারখানেক করে বিড়ি বাঁধি। তারপর রাতে পড়তাম। টিউশনি পড়ার টাকা ছিল না। এলাকারই এক শিক্ষক সাহায্য করতেন আমাদের।’ রেখার ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়ার। বিজ্ঞানে খুব ভাল নম্বরও পেয়েছে সে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে দু’জনের পড়ার খরচ জুটবে কী করে তা এখনো জানে না সে। সাইনারা বিবি বলেন, “আমি আর ওদের বাবা দু’জনেই প্রাথমিক পর্যন্ত পড়েছি। ভেবেছিলাম মেয়েদের দিয়েই স্বপ্ন পূরণ হবে। কিন্তু খরচ জোটাব কী করে জানিনা।” বাবা হোসেন আলিরও চিন্তা এটাই। বললেন, “নিজের সংসার চালাতেই পারিনা। মেয়েরা সাহায্য করে। জানিনা পড়াব কী করে।”
জঙ্গিপুর হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, “দুঃস্থ ও কৃতী ছাত্রদের পড়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারি নানা সুযোগসুবিধা রয়েছে। এরাও যাতে সেই সুযোগ পায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি সাহায্য পাবো।” রেখা, সেতারারও ভরসা এখন সেটাই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.