|
|
|
|
মাছের উৎপাদন বাড়াতে ব্লক স্তরে প্রশিক্ষণ শিবির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পশ্চিম মেদিনীপুরে মাছের উৎপাদন বাড়াতে প্রশিক্ষণের উপরই জোর দিচ্ছে মৎস্য দফতর। ব্লক স্তরে প্রশিক্ষণ শিবির করে মৎস্য চাষিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মৎস্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর (পশ্চিমাঞ্চল) উৎপল সর বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরে মাছ উৎপাদন আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এ জন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে।” পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৪৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। চাহিদা অবশ্য প্রায় ৫৩ হাজার মেট্রিক টন। দফতরের বক্তব্য, প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ফলেই গত কয়েক বছরের তুলনায় জেলায় এখন মাছের উৎপাদন বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর রয়েছে। তার কিছু ব্যক্তি মালিকানার, কিছু আবার সরকারি। সরকারি পুকুরগুলি লিজ দেওয়া হয়। এই সব পুকুরেই মাছ চাষ হয়। জেলার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। তাঁদেরকেই বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত ৩০ বছরে জেলার প্রায় ৩৯ হাজার চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে দফতরের দাবি। যাঁরা এখনও নেননি, তাঁদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। জেলার পিংলা, নারায়ণগড়, সবং, মোহনপুর, চন্দ্রকোনা প্রভৃতি এলাকাতেই মাছ উৎপাদন বেশি। অধিকাংশই পোনা মাছ। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর জলাশয় রয়েছে। এর মধ্যে মাছ চাষের জন্য যোগ্য জলাশয়ের পরিমাণ প্রায় ২৩ হাজার ১৭০ হেক্টর। তবে এই পরিমাণ জলাশয়ে মাছ চাষ হয় না। কারণ, বেশ কয়েকটি পুকুর সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। সরকারি উদ্যোগ থাকলে অবশ্য এই সব পুকুরেও মাছ চাষ সম্ভব হত। সেক্ষেত্রে স্থানীয় বেকার যুবকেরাও উপকৃত হতেন। এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে পারতেন। মৎস দফতরের এ জেলার অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর দীপক মাঝি অবশ্য বলেন, “ব্যক্তি মালিকানার পুকুরগুলি সরকারি উদ্যোগে সংস্কার সম্ভব নয়। তবে সরকারি পুকুরগুলি মাঝেমধ্যে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হয়।”
মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন পাঁচখুরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কয়েকটি পুকুর রয়েছে। পূর্ত দফতরের জায়গায় থাকা এই পুকুরগুলি মৎস্য দফতরের অধীনে রয়েছে। দফতর থেকে আবার মাছ চাষ করার জন্য এই পুকুর একটি কো-অপারেটিভ সোসাইটিকেও দেওয়া হয়েছে। সংস্কারের অভাবে পুকুরটি প্রায় মজে গিয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে পুকুর সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এখন সেই সংস্কারের কাজ চলছে। এ জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১৭ লক্ষ ৭ হাজার টাকা। মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, এর মধ্যে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকায় মাছ চাষের উপকরণ কেনা হবে। বাকি টাকায় পুকুর সংস্কার, চারপাশে কাঁটা-তারের বেড়া দেওয়ার কাজ হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরের দাবি, মাছের উৎপাদন বাড়াতে যা যা পদক্ষেপ করা জরুরি, সবই করা হচ্ছে। জেলায় প্রায় ৪০ হাজার ৩০০টি পুকুর রয়েছে। এই সব পুকুরে বছরে গড়ে প্রায় ৪৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন অন্যত্র চলে যায় বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “কয়েক বছর আগেও জেলায় প্রায় ৪০-৪২ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হত। এখন তা বেড়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই উৎপাদন প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে।” তাঁর কথায়, “উৎপাদন বাড়ানোর জন্যই প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ব্লক স্তরে আরও প্রশিক্ষণ শিবির করা হবে।” |
|
|
|
|
|