এক দিকে পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে নিলেন লিউক পোমার্সব্যাচ। অন্য দিকে, মাদক নেওয়ার অভিযোগে পুণে ওয়ারিয়র্সের দুই ক্রিকেটারের রক্ত ও মূত্রের নমুনা সংগ্রহ। আইপিএল নিয়ে বিতক থামার লক্ষণ নেই।
দিল্লিতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটার লিউক পোমার্সব্যাচ এ দিন দিল্লি পুলিশের জেরার মুখে নিজের দোষ স্বীকার করে নেন। দিল্লি পুলিশকে তিনি আজ বলেন “আমার বিরুদ্ধে জোহল হামিদের করা শ্লীলতাহানির অভিযোগ সত্য। ওই দিন মদ্যপ অবস্থায় ওই ভুল আমি করে ফেলেছি। জোহলের বন্ধু সাহিলের সঙ্গে মারামারি করায় ও চোট পেয়েছে। আমারও হাত ভেঙেছে। ওই ঘটনার জন্য জোহল ও শাহিলের কাছে আমি দুঃখিত।” শোনা যাচ্ছে, সাহিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজির বিজয় মাল্যর ছেলে মালিক সিদ্ধার্থ মাল্যর বন্ধু। সিদ্ধার্থের আমন্ত্রণেই নাকি সেই রাতে পার্টিতে গিয়েছিলেন সাহিল।
এর মধ্যে মুম্বইয়ে মাদক-কাণ্ডে পুলিশ এ দিন বিশয় হন্ডাকে গ্রেফতার করেছে। মুম্বইয়ের যে হোটেলে রবিবার রাতে পার্টি হচ্ছিল, তার ডিরেক্টর হন্ডা। গত কাল পার্টিতে হানা দিয়ে ৯৬ জনকে পুলিশ আটক করেছিল। প্রথমে নাম প্রকাশ করতে না চাইলেও এ দিন পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পুণে ওয়ারিয়র্সের দুই ক্রিকেটার রাহুল শর্মা এবং ওয়েন পার্নেল ছিলেন। রক্ত এবং মূত্রের নমুনা সংগ্রহ করে অবশ্য সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের বয়ান অনুযায়ী, পার্টি থেকে ১১০ গ্রাম মতো কোকেন পাওয়া যায়। |
পুলিশের কাছে বললেও পোমার্সব্যাচ এখনও আদালতের সামনে দোষ স্বীকার করেননি। ফলে তাঁর মামলা নিয়ে শুনানি এখন গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে পোমার্সব্যাচ-কাণ্ডে জড়িয়ে যেতে পারেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের এক ভারতীয় ক্রিকেটারও। জোহলকে ভয় দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অন্য যে ক্রিকেটারকে সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, তিনি আরসিবির কেপি আপান্না। তাঁকে এ দিন দিল্লিতে এসে সাক্ষী দিতে বলেছে পুলিশ।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে, লিউকের সঙ্গে জোহল ও সাহিল লিফ্ট থেকে নেমে নিজেদের ঘরের দিকে যাচ্ছেন। সঙ্গে তাঁদের আর এক বন্ধু মোইজ। ঘরে তখন আর এক বন্ধু মিরাজ ঘুমোচ্ছিলেন। দরজা খুলে লিউক-সহ জোহলরা ঘরে ঢুকে যান। এর কিছু ক্ষণ পর জোহল হন্তদন্ত হয়ে একাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন এবং হোটেলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কয়েক মুহূর্ত পরে লিউকও বেরিয়ে আসেন এবং হেঁটে চলে যান। জোহলের ডাকে হোটেলের ফ্লোর ম্যানেজার তখন গার্ড বিকাশ যাদবের সঙ্গে উপরে আসেন। মিরাজ তখন জোহলকে নিয়ে ঘরে ফিরে যান।
সিসিটিভি ফুটেজে আরও কিছু ক্ষণ পর দেখা গিয়েছে, লিউক, বিকাশ ও আপান্না আর এক বার জোহলের কামরার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। দরজায় টোকা দেওয়ার পর জোহল অল্প একটু দরজা খুলে দেখেন, লিউক ও আপান্না বাইরে থেকে জোর করে দরজা খুলে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দরজা খুলতে পারেননি তাঁরা। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পুরো ঘটনাটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জোহলরা অভিযোগ করেন, এর পর জখম সাহিলকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে গিয়ে আপান্না বারবার লিউকের উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। এখানেই শেষ নয়, পরে জোহল যখন নিজের ব্যাগ নিতে হোটেলে ফেরেন, তখন সেখানেও তিন-চার জন তাঁর উপর চড়াও হয়। তাদেরও দাবি ছিল, লিউকের উপর থেকে মামলা তুলে নিতে হবে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপান্নার জন্যও শাস্তি অপেক্ষা করে আছে কি না, সেটাই দেখার। |