নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হতদরিদ্র পরিবারের ছ’বছরের শিশুটিকে খাটানো হচ্ছিল হোটেলে। খদ্দেরকে রুটি দিতে ভুলে গিয়েছিল সে। শাস্তি হিসেবে জুটল গরম ছাঁকনির ছেঁকা!
সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার পাইকারি সব্জি বাজারে ছোট একটি হোটেলে। পুলিশ ওই হোটেলের মালিক অধীপ রায়কে গ্রেফতার করেছে।
শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। তাকে কোনও সরকারি হোমে রাখা হবে, নাকি বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে সেই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মাস তিনেক আগে হাওড়া ময়দান এলাকায় ফুটবল নিয়ে গোলমালকে কেন্দ্র করে গরম লোহার রড দিয়ে ১০ বছরের একটি বালকের পিঠ, বুক পুড়িয়ে দিয়েছিল পাড়ার এক ‘কাকু’। সেই ঘটনাতেও গ্রেফতার করা
হয়েছিল অভিযুক্তকে। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলাবাড়িতে যে-শিশুটির উপরে অত্যাচার চালানো হয়েছে, তার নাম সোনু রায়। নিজের হোটেলে ফাইফরমাশ খাটানোর জন্য কয়েক মাস আগে বিহারের গ্রাম থেকে তাকে নিজের হোটেলে নিয়ে এসেছিলেন অধীপ। পুলিশ জানায়, সোনুরা চার ভাইবোন। সোনুর বাবা মহেশ রায় মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের বক্তব্য, দারিদ্রের সুযোগ নিয়েই শিশুটিকে হাওড়ায় নিয়ে আসেন অধীপ।
রাহুল সোনকার নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, “শিশুটির উপরে প্রায়ই নানা ভাবে অত্যাচার চালাত হোটেল-মালিক। মারধর করত। এ দিন এক খদ্দের রুটি চেয়েছিলেন। মালিক ওকে রুটি দিতে বলে। কিন্তু অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় শিশুটি তা ভুলে যায়। তার পরেই গরম ছাঁকনি দিয়ে শিশুটির শরীরে ছেঁকা দিতে থাকে হোটেল-মালিক। শিশুটি চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।” তার চিৎকার শুনেই এলাকার মানুষ পুলিশে খবর দেন।
শিশু শ্রমিকের উপরে অত্যাচারের খবর পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন এসিপি (উত্তর) সৌমিক সেনগুপ্ত। পরে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ হোটেল-মালিক এবং শিশুটিকে থানায় নিয়ে যায়। বিকেলে থানায় বসে সোনু তার ডান হাতে এবং গলায় পুড়ে যাওয়া কালো দাগ দেখিয়ে বলে, “একটা ভুল করেছিলাম। তাই মালিক লোহার ছাঁকনি গরম করে পুড়িয়ে দিয়েছে। খুব জ্বালা করছিল।” সোনু পুলিশকে জানায়, মালিক তাকে প্রায়ই মারধর করতেন। মাঝেমধ্যেই খাবার দেওয়া বন্ধ করে দিতেন। এসিপি জানান, শিশুটির অভিযোগের ভিত্তিতেই হোটেল-মালিককে গ্রেফতার করা হয়। |