মমতার সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ কংগ্রেস মন্ত্রীদের |
ইন্দিরা ভবনের নাম বদলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ জানাতে দলীয় মন্ত্রী মানস ভুইয়াঁকে দায়িত্ব দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। দলের অন্য পাঁচ মন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে সোমবার মানসবাবুকে চিঠি দিয়ে ওই অনুরোধ করেন প্রদীপবাবু।
মানসবাবু ‘অনুরোধ’ রাখবেন, এমন কোনও ইঙ্গিত তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে মেলেনি। প্রদেশ সভাপতিও বলেন, “মানসরা যদি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে না-পারে বা সরকার নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, তা হলে পথে নামা ছাড়া আমাদের গত্যন্তর নেই।”
ঘটনাচক্রে, পুর নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ দিন আবার বলেছেন, “সল্টলেকের ওই ভবন ভেঙে সেখানে নতুন বহুতল গড়া হবে। সেখানেই হবে নজরুল অ্যাকাডেমি ও একটি সংগ্রহশালা।” ভবনের নামকরণ নিয়ে সরকারের পুরনো সিদ্ধান্তের পুনরাবৃত্তি করেই ফিরহাদ বলেন, “সল্টলেকের যে মাটির বাড়িতে এসে ইন্দিরা গাঁধী ছিলেন, তিনি সেই বাড়ির দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন। সেই কথা লেখা রয়েছে ওই বাড়ির মূল ফটকে লাগানো ফলকে। নতুন ভবনের মূল ফটকেও সেই ফলক রাখা হবে।’’ ভবনটিকে ‘ইন্দিরা ভবন’ বলে মানতে নারাজ পুরমন্ত্রীর ফের যুক্তি, “জ্যোতি বসু যে বাড়িতে থাকতেন, তার নাম কোনও দিনই ইন্দিরা ভবন ছিল না।”
অর্থাৎ ভবনের নামকরণ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নামানুসারেই হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছেই। মাস কয়েক আগে ইন্দিরা ভবনে নজরুল অ্যাকাডেমি তৈরির ঘোষণার পরে নাম বদল না-করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন প্রদেশ সভাপতি। তাতেও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। আগামী শুক্রবার ওই ভবনে গিয়ে নজরুল অ্যাকাডেমি গড়ার সরকারি কাজ শুরু করার কথা মমতার। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রবিবার ওই ভবনে ইন্দিরা’জির নামাঙ্কিত একটি ফলক লাগান কংগ্রেস কর্মীরা। পরে অবশ্য প্রশাসন তা খুলে ফেলে। নিজেদের অবস্থানে ‘অনড়’ থেকেই ফের আগামিকাল, বুধবার সেখানে বিক্ষোভ দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস। ওই বিক্ষোভে সামিল হতে দলের ৪২ জন বিধায়ককে এ দিন অনুরোধ করেন প্রদীপবাবু। ওই বিক্ষোভ কর্মসূচির কথা আজ, মঙ্গলবার দিল্লিতে গিয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়-সহ হাইকম্যান্ডকেও জানাবেন প্রদীপবাবু। তিনি ফের মমতাকে চিঠিও দিতে পারেন বলে প্রদীপবাবু জানান। ফলে ইন্দিরা-ভবন নিয়ে ফের দুই শরিকের ‘তিক্ততা’ বাড়তেই পারে। দলের ‘অনুরোধ’ যে তাঁর পক্ষে রাখা সম্ভব না-ও হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়ে মানসবাবু বলেন, “স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য মঙ্গলবার সকালেই চেন্নাই যেতে হচ্ছে। এ দিনও তারই প্রস্তুতি চলেছে। অন্য কোনও কাজে মন দিতে পারিনি।”
|