হাঁসফাস গরমের মধ্যে রবিবার বিকেলের ঝড়-বৃষ্টিতে খানিকটা হলেও স্বস্তি মিলেছে জেলার বিভিন্ন অংশে। তবে স্বস্তির পাশাপাশি ঝড়-বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দুবরাজপুর ব্লকের বিভিন্ন জায়গায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়রাশোল ব্লকের কেন্দ্রগড়িয়া-সহ দু-তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় বহু বাড়ির টিনের চাল ও খড়ের চাল উড়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে বহু গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুতহীন থেকেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দত্ত বলেন, “১৫০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৩৫০টি বাড়ি। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দুবরাজপুরের কাপাসতোড় গ্রামে। ওই গ্রামেই শুধু ৩৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
অন্য দিকে, খয়রাশোলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর রায় জানান, এখনও প্রর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পাওয়া না গেলেও কেন্দ্রগড়িয়া পঞ্চায়েতের চূড়র কলোনিতে ২২টি বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। ওই পঞ্চায়েতেরই হজরতপুর, কৃষ্ণপুর অঞ্চলের পলপই, ভবানীগঞ্জ এবং পাঁচড়া অঞ্চলে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। |
সোমবার সকালে কাপাসতোড় গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, অধিকাংশ কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কারও বাড়ির টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে ফেলেছে কয়েক মিটার দূরে, কারও বাড়ির খড়ের চাল সমেত ধসে গিয়েছে পুরো বাড়িটাই। এখানে সেখানে ভেঙে পড়ে রয়েছে বিশাল বিশাল গাছ। কোনও কোনও জায়গায় গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটি বাড়ির উপর ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বাড়িঘরের যা ক্ষতি হয়েছে সেখান খেকে নতুন বাড়িঘর তৈরি করতে নাভিশ্বাস উঠবে। বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি মহম্মদ শরিফ বলেন, “রবিবার ঢালাইয়ের কাজ সেরে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। বিকেলে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বাড়ির বাইরে বেরতে পারিনি। হঠাৎ বাড়ির পাশে থাকা খুঁটিটি আমার বাড়ির উপর ভেঙে পড়ল। তাতে পুরো বাড়িটাই আমার উপর ধসে পড়ল। কোনও ভাবে বেঁচে গিয়েছি।” একই ভাবে বাড়ি ধসে পড়েছে এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মিলি খাতুনদের।
মাথার উপর ছাদ চলে যাওয়ায় ওই গ্রামের মুজি বিবি, ফুলবাহার বিবি, সন্ধ্যা বাদ্যকররা বলেন, “এখন পরিবার নিয়ে কোথায় থাকব।” বিডিও গোবিন্দ দত্ত বলেন, “ত্রাণ হিসেবে ত্রিপল, জামাকাপড়, চাল ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলির কাছে পাঠানো হয়েছে।” |