দুর্গাপুরে উদ্বিগ্ন প্রশাসন
সরু টানা জালে মাছ ধরা চলছেই
মাছ উৎপাদন যথাযথ রাখা এবং বিরল প্রজাতির মাছের বংশরক্ষার জন্য সরকারি উদ্যোগে মাছের চারা ছাড়া হচ্ছে দামোদরে। একই সঙ্গে মুনাফার লোভে সরু টানা জাল ব্যবহার করে মৎস্যজীবীদের একাংশ মাছের চারা নষ্ট করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। দুর্গাপুর ব্যারাজ সংলগ্ন দামোদরে দিনের পর দিন এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন পুরসভা। ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান বলেন, “জেলেরা সচেতন না হলে এই উদ্যোগ কখনওই সফল হবে না। তাঁদের এই কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হবে। পাশাপাশি বিষয়টি জানানো হবে মৎস্য দফতরেও।”
নিজস্ব চিত্র।
জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য নদীতে গিয়ে মেশার কারণে নদীতে মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পেটের ভাতের জোগাড় করতে মৎস্যজীবীরা ছোট ছোট মাছও ধরে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় মাছের বংশরক্ষা নিয়েই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই লুপ্ত হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছ। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সমাধানে রাজ্যের মৎস্য দফতর ভাগীরথী ও দামোদরে ধারাবাহিকভাবে মাছের চারা ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পুরসভার আশিসনগর এলাকায় দামোদরের ধারে সাড়ে তিনশো মৎস্যজীবীর সুবিধার্থে পুরসভার পক্ষ থেকে মৎস্য দফতরের কাছে দামোদরের ওই অংশে মাছের চারা ছাড়ার আর্জি জানানো হয়। অক্টোবরে দফতরের পক্ষ থেকে স্থানীয় বারোয়ারি ঘাটে কুড়ি কুইন্ট্যাল রুই, কাতলা, মৃগেল এবং দুই কুইন্ট্যাল লুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছের চারা ছাড়া হয়। সে দিনই উপস্থিত দফতরের আধিকারিকরা মৎস্যজীবিদের সতর্ক করে জানান, কোনও ভাবেই যেন তাঁদের জালে কোনও চারা মাছ না ওঠে। কারণ মাছ বড় হয়ে প্রজননক্ষম না হলে বংশবৃদ্ধি হবে না।
সম্প্রতি দামোদরের ওই ঘাটে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মশারির মতো সরু টানা জাল ব্যবহার করে মাছ ধরার কাজ চলছে। জাল টেনে ডাঙায় তোলার পরে তা রেখে দেওয়া হচ্ছে বহুক্ষণ। এর পরে বড় মাছগুলি নিয়ে যাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। ততক্ষণে জালে আটক শত শত চারা মাছ মারা গিয়েছে। মৎস্যজীবীরা জাল ধোয়ার সময়ে সে গুলি ফেলে দিচ্ছেন জলে। মৃত চারা মাছ ভেসে বেড়াচ্ছে ইতস্তত।
মৎস্যজীবী সুবলচন্দ্র জোয়ারদারের কথায়, “বড় মাছ তুলতে গেলে কিছু ছোট মাছ মারা যাবে। এ আর নতুন কথা কি!” হেলদোল নেই তাঁর সঙ্গী মাখন রুইদাস, মাধাই বাগদিদেরও। এ ভাবে চারা মাছ নষ্ট হলে তাঁদেরই তো ক্ষতি। ভবিষ্যতে মাছের আকাল দেখা দেবে। অতশত ভাবতে রাজি নন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, “অত ভাবতে গেলে পেট চলবে না।”
পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান জানান, পুরসভার পক্ষ থেকে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে বিষয়টি বার বার জানানো হয়েছে। তাতে ফলও মিলেছে। ডেপুটি মেয়রের দাবি, “মূলত বাইরে থেকে আসা জেলেরাই টানা জাল ব্যবহার করে মাছের চারা নষ্ট করে থাকেন। কারণ ভবিষ্যতের ভাবনার দায় তাঁদের নেই।” তিনি জানান, স্থানীয় জেলেরা যাতে নজরদারি চালান সে ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। মৎস্য দফতরকেও পুরসভার পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি মেয়র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.