ইস্তফার হুমকি সাত মন্ত্রীর
ইয়েদুরাপ্পার ক্ষোভে কর্নাটকে চরম সঙ্কটের মুখোমুখি বিজেপি
র কোনও হুমকি নয়। এ বার সরাসরি দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে চাপ আরও বাড়ালেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। এর মধ্যেই আজ মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ইস্তফা দিতে চেয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছেন ইয়েদুরাপ্পা-ঘনিষ্ঠ রাজ্যের সাত মন্ত্রী এবং ছ’জন বিধায়ক। সব মিলিয়ে বড় ধরনের সঙ্কটে কর্নাটক বিজেপি। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নেমেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
অবৈধ খনন মামলার জেরে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। তার উপর গত কালই ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কাল বিজেপির কোনও কেন্দ্রীয় নেতা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এই ঘটনায় নিজেকে ‘উপেক্ষিত’ মনে করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে বারবার চাপ বাড়িয়েও দলের কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর গদি ফেরত পাননি এখনও। এই পরিস্থিতিতে আজ নিজের বাড়িতে অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, ইয়েদুরাপ্পা বরং দল ছেড়েই বেরিয়ে আসুন। এই বৈঠকের পরেই কর্নাটকের বিদ্যুৎমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, আবগারি মন্ত্রী-সহ মোট সাত মন্ত্রী নিজেদের ইস্তফাপত্র তুলে দেন ইয়েদুরাপ্পার হাতে। সোমবার তাঁরা বিধানসভা থেকেও ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে ইয়েদুরাপ্পা শিবির থেকে জানানো হয়েছে।
গত ২৪ মার্চ সদানন্দ গৌড়া এবং কর্নাটক বিজেপির সভাপতি কে এস ঈশ্বরাপ্পা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে ইয়েদুরাপ্পা-ঘনিষ্ঠ কয়েক জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগ জানান। তার পরেই ৩৮ জন বিধায়ক (কয়েক জন মন্ত্রী-সহ) পরিষদীয় দলের জরুরি বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর এবং বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে বৈঠক ডাকার কোনও দরকার নেই। ফলে অসন্তোষ বাড়ে ইয়েদুরাপ্পা-ঘনিষ্ঠদের। এক মন্ত্রী বলেন, “আমরা কিছু না করা সত্ত্বেও দলবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগ আনা হল। তাই এই সিদ্ধান্ত। ইস্তফার ব্যাপারে আমাদের নেতা (ইয়েদুরাপ্পা) যা বলবেন, তা-ই হবে।” গৌড়া অবশ্য বলেছেন, কোনও মন্ত্রীর ইস্তফার খবর তাঁর জানা নেই।
বিজেপি সূত্রের খবর, কর্নাটকে সঙ্কট ঘনীভূত হয়ে ওঠার পরেই নিতিন গডকড়ী-অরুণ জেটলিরা ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা আজ আর কথা বলতে চাননি। তখন দলের পক্ষ থেকে তাঁকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয় যে, দল মোটেই তাঁকে উপেক্ষা করছে না। তিনি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নেতা। বিজেপি-সূত্র বলছে, ইয়েদুরাপ্পা সত্যি সত্যিই দল ছাড়ার কথা ভাবছেন নাকি দর কষাকষির পথে হাঁটছেন, সেটাই এখন খতিয়ে দেখছেন দলীয় নেতৃত্ব। বিজেপি জানে, প্রবীণ লিঙ্গায়েত নেতা ইয়েদুরাপ্পার জনভিত্তি প্রচুর। কাজেই তিনি দল ছাড়লে বিজেপির ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী। তবে দল ছেড়ে ইয়েদুরাপ্পারও আখেরে লাভ নেই। সঙ্ঘের তরফেও তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে।
আসলে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ফিরে পাওয়ার আশায় গত দু’মাস ধরে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেই ছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বকে গৌড়ার চিঠি দেওয়া, নিজের গদি ফেরত পাওয়ায় বিলম্ব ঘটনাপ্রবাহের জেরে বাড়ছিল তাঁর ‘অভিমান’। সেই অভিমানই আপাতত চরমে। পৃথক দল গড়ার পরিকল্পনা তাঁর অনেক দিনের। বস্তুত, তাঁর এক অনুগামী বিজেপি ছেড়ে ইতিমধ্যেই নতুন দল গড়ে বসে রয়েছেন। ইয়েদুরাপ্পা নিজে কী করেন, সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.