ক্ষোভ প্রশমনে উদ্যোগী কেন্দ্র
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কাঁটা হতে পারে টেলিনর, দাবি নরওয়ের
টু-জি স্পেকট্রাম বিতর্কের আঁচ এ বার কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিসরেও। টেলিনরের স্পেকট্রাম খোয়ানোর জেরে ভারত ও নরওয়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন নরওয়ের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ট্রন্ড গিস্কে। এ প্রসঙ্গে শনিবার নয়াদিল্লিতে তিনি স্পষ্ট জানান, নরওয়ের টেলিনর শেষ পর্যন্ত ভারত থেকে ব্যবসা গোটাতে বাধ্য হলে, বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে এই দেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও অযথা শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে টেলিনরকে। আগামী দিনে এই ঘটনা প্রভাব ফেলতে পারে দু’দেশের সম্পর্কেও।
অবশ্য, গিস্কে-কে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বল। নরওয়ের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের
ট্রন্ড গিস্কে। ছবি: এএফপি
পর তাঁর দাবি, “চিন্তার কোনও কারণ নেই। বিদেশি লগ্নির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই শুধু টেলিনর নয়, এ বিষয়ে নির্ভাবনায় থাকতে পারেন সব বিদেশি লগ্নিকারীরাই।”
সিব্বল আশ্বাস দিলেও, টেলিনরের বিষয়টি তাঁদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা এ দিন বার বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন গিস্কে। জানিয়েছেন, “টেলিনর কোনও সাধারণ সংস্থা নয়। এতে ৫৪% অংশীদারিত্ব রয়েছে নরওয়ে সরকারেরই। অর্থাৎ এতে লগ্নি রয়েছে সে দেশের সাধারণ মানুষের অর্থ। তাই সেই সংস্থা ভারত থেকে ব্যবসা গোটাতে বাধ্য হলে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা।” শিল্পমহলও মনে করছে, টেলিনরের পক্ষে সওয়াল করতে গিস্কের এই দিল্লি সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ তিনি শুধু ওই দেশের মন্ত্রী নন, টেলিনরে নরওয়ে সরকারের প্রতিনিধিও। ফলে তিনি এতখানি কড়া সুরে কথা বললে তা বাড়তি গুরুত্ব পেতে বাধ্য বলে তাদের অভিমত।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এ দেশে টেলি পরিষেবার ২২টি লাইসেন্স খুইয়েছিল ইউনিনর। এই ইউনিনর আদপে টেলিনর ও ভারতীয় সংস্থা ইউনিটেকের যৌথ উদ্যোগ। যেখানে টেলিনরের অংশীদারি ৬৭.২৫%। সেই লাইসেন্স হারানো এবং তার পর ট্রাইয়ের চড়া স্পেকট্রাম দরের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গোড়া থেকেই সরব হয়েছে টেলিনর। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে বার কয়েক ভারতের কাছে দরবারও করেছে নরওয়ের সরকার। এর আগেও সিব্বল, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন নরওয়ের মন্ত্রীরা। দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী স্তরেও বৈঠক হয়েছে।
টেলিনরের দাবি, টু-জি কাণ্ডের জেরে সংস্থার লগ্নির যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তার দায় তাদের নয়। নিয়মনীতি মেনেই তারা এ দেশে লগ্নি করেছিল। ভারতে তারা যে দীর্ঘমেয়াদি লগ্নির পরিকল্পনা নিয়েই এসেছেন, সে কথাও বার বার জানিয়েছেন সংস্থার কর্তারা। তবে একই সঙ্গে এ দেশের টেলিকম নীতির প্রতি তাদের আস্থা নিয়েও সম্প্রতি সংশয় দেখা দিয়েছে। যেমন, আর্থিক ফল ঘোষণা করতে গিয়ে সংস্থা এই প্রথম পূর্বাভাস থেকে বাদ রেখেছে তাদের ভারতীয় ব্যবসাকে। প্রথম ত্রৈমাসিকে সংস্থার নিট মুনাফা প্রায় ৮০% কমেছে। এ জন্য ভারতে তাদের প্রায় ৬.৮২ কোটি ডলারের ব্যবসা মুছে যাওয়াই অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এ দেশে টেলিনর প্রায় ৩০০ কোটি ডলার লগ্নি করেছে। অবশ্য গিস্কে জানিয়েছেন, শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.