বেসরকারি উদ্যোগে শহরে মেডিক্যাল কলেজ গড়তে চেয়ে পাঁচ বছরে একাধিক বার প্রস্তাব-দরবার, নাগরিক কনভেনশন করে ‘ব্যর্থ’ হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করলেন জলপাইগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। শহরে মেডিক্যাল কলেজে চেয়ে গঠিত অরাজনৈতিক দাবি মঞ্চের সদস্যরা সোমবার দিনভর শহরের থানা মোড়ে অবস্থান করে বিকালে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেছেন। অবস্থান মঞ্চ থেকে জেলাশাসকের দফতর সব কর্মসূচিতেই নেতৃত্ব দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেসের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। কর্মসূচিতে জেলা কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এবং জলপাইগুড়ি বার আসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। যদিও এদিনের আন্দোলনকে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূলের একাংশ। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “জলপাইগুড়ির বিধায়ক থাকার সময় শহরে একটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির দাবি পূর্বতন সরকারকে জানাই। একটি সর্বভারতীয় বেসরকারি সংস্থাকে শহরে বিনিয়োগে রাজি করানো হয়। আগের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বার বার দেখা করেও সেই সংস্থার বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করা যায়নি। সংস্থাটি ফিরে গিয়েছে। গত বছরের অগস্ট মাসে রাজ্যেরই একটি সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে। টিবি হাসপাতাল পাড়ায় রেডক্রসের অব্যবহৃত জমি সংস্থার পছন্দ হয়েছে। |
রেডক্রসের জেলায় চেয়ারপার্সন জেলাশাসকের কাছে জমি চেয়ে আর্জি জানান। ৮ মাস কেটে গেলেও উত্তর আসেনি।” প্রথমে ২০০৭ সালে যে সংস্থাকে দেবপ্রসাদবাবু মেডিক্যাল কলেজ তৈরির জন্য শহরে নিয়ে এসেছিলেন, সেই সংস্থাটি টিবি হাসপাতাল পাড়ার জমিটিকেই পছন্দ করে। দীর্ঘ তিন বছর জমির জন্য অপেক্ষা করে সংস্থাটি বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। গত বছর ফের একটি বেসরকারি সংস্থাকে জলপাইগুড়িতে নিয়ে আসেন দেবপ্রসাদবাবু। রেডক্রসের জলপাইগুড়ি জেলার চেয়ারপার্সন তথা জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “রেডক্রসের জমিতে হাসপাতাল হবে এটি ভাল কথা। তবে রেডক্রসের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি আলোচনাধীন।” এই আন্দোলনকে কটাক্ষ করে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সোমনাথ পাল বলেন, “রাজ্য সরকার তো শহরে হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি করছে। এই ধরনের আন্দোলন করে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।” যদিও রাজনৈতিক পাল্টা আক্রমণ এড়িয়ে দেবপ্রসাদবাবু বলেছেন, “এই প্রথম রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের জন্য সার্বিক উন্নয়নের চিন্তাভাবনা করছেন। কাজ করে দেখিয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজের জমির বিষয়টি বর্তমান রাজ্য সরকারের কাছেও যাওয়ার বিষয় নয়। এটি রেড ক্রসের বিষয়। যার জেলার প্রধান হলেন জেলাশাসক। আমি নিশ্চিত যে রেডক্রসের থেকে জমি পেয়ে গেলে রাজ্য সরকারের থেকেও যথাযথ সাহায্য পাওয়া যাবে।” |