বেআইনিভাবে কর্মী নিয়োগের অভিযোগে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) সিডিপিও-কে গ্রেফতারের দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন। সোমবার ময়নাগুড়ি থানা এলাকার ঘটনা। বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন দেবব্রত মিত্র যিনি প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটিতে সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে যান ময়নাগুড়ির বিডিও। বিকেল নাগাদ পুলিশ ওই আধিকারিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। দেবব্রতবাবু বলেন, “হোম কোটায় ১৫ জনকে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। যাঁদের নেওয়া হয়েছে তাঁদের কেউ কোটায় পড়েন না। নিয়োগের পিছনে টাকা লেনদেন হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ।” তৃণমূল শ্রমিক নেতৃত্বের অভিযোগ, বেআইনিভাবে আরএসপি নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যদের পরিবারের ১৫ জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছেন ওই আইসিডিএস আধিকারিক। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য মিতু চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের নিয়োগের যে তালিকা রয়েছে তার ৪ নম্বরে আরএসপির প্রাক্তন বিধায়ক বাচ্চামোহন রায়ের পুত্রবধূ এবং ৬ নম্বরে সাহেনারা বেগম নামে আরএসপি পঞ্চায়েত সদস্যার নাম রয়েছে। ওঁরা কেউ কখনও হোমে থাকেনি। টাকার বিনিময়ে নিয়োগ হয়েছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে সিডিপিও অজয় বড়ুয়া বলেন, “দফতরের নির্দেশে ওই নিয়োগ হয়েছে। আমাদের কিছুূ করার নেই।” দফতরের জলপাইগুড়ি জেলা প্রকল্প আধিকারিক বিজয় রায় বলেন, “হাইকোর্ট ও দফতরের নির্দেশে সংরক্ষিত কোটায় নিয়োগ হয়েছে। সিডিপিও-র কোনও ভূমিকা নেই।” |
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরএসপির প্রাক্তন বিধায়ক। তিনি বলেন, “আইসিডিএসে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সংরক্ষিত থাকে হোম কোটায়। সেটা মন্ত্রী ঠিক করেন। যে ভাবে তিনি তালিকা পাঠান সে ভাবে নিয়োগ হয়। এখানেও সেটা হয়েছে।” পুত্রবধূর চাকরি পাওয়া নিয়ে প্রাক্তন বিধায়কের যুক্তি, “শুধু হোম কোটা নয়, দুঃস্থ পরিবারের মহিলারাও চাকরি পেতে পারেন। আমার ছেলে তেমন কিছু করে না। ছোট দোকান আছে। দুঃস্থ হিসেবেই ওঁর স্ত্রী পেয়েছে।” গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ময়নাগুড়ি ব্লকে দুশোটি নতুন আইসিডিএস কেন্দ্র খোলা হয়। সংরক্ষিত কোটায় ছিল ২০ জন। তার মধ্যে ১৫ জনের একটি তালিকা মন্ত্রীর দফতর থেকে নিয়োগের জন্য স্থানীয় আধিকারিককে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই সময় নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা হওয়ায় নিয়োগপত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি। নতুন সরকার সমস্ত নিয়োগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। ডিসেম্বর মাসে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি জেলা প্রকল্প আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যে কর্মপ্রার্থীদের কয়েকজন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট দফতরের কাছে জানতে চায় কেন তাঁদের নিয়োগপত্র আটকে রাখা হয়েছে। সরকার জানায় ইতিমধ্যে নিয়োগের সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় গত ৪ এপ্রিল নিয়োগের নিদের্শও দফতর থেকে দেওয়া হয়। এ দিন বিকেলে সিডিপিওকে উদ্ধারের পরে ময়নাগুড়ি থানার আইসি বিশ্বনাথ হালদার বলেন, “নিরাপত্তার জন্য আমরা ওই অফিসারকে থানায় নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছি। দফতর থেকে অভিযোগ জানালে আমরা তাঁকে গ্রেফতার করতে পারি না। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।” |