ধূপগুড়িতে পুর নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ভেস্তে গেল। সোমবার পুরসভার ১৬টি আসনের জন্যই মনোনয়নপত্র জমা দেয় তৃণমূল। অন্যদিকে, কংগ্রেস ১১টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়। তার আগে তৃণমূলের তরফে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসুর নেতৃত্বে দুই দলের নেতারা একপ্রস্ত বৈঠক করেন। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে তৃণমূল ছেড়ে তাঁদের দলে যোগ দেওয়া এক নেতার জন্য ১৪ নম্বর ওয়ার্ডটি চেয়েছিল কংগ্রেস। তৃণমূল সেটি দিতে রাজি না-হওয়ায় জোট প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। ওই দুই দলের কর্মী সমর্থকেরা এখনও আশা হারাননি। কেননা, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য ১১ মে পর্যন্ত দুই দলের হাতেই সময় রয়েছে। নিচুতলার কর্মীদের আশা, তার আগেই সমস্যা মিটে যাবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বক্তব্য, যে নেতা তৃণমূলের টিকিট না-পেয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেস তাঁকে টিকিট দিলেও তার জন্য আসন ছাড়ার ব্যাপারে তাঁরা নীতিগত ভাবে বিরোধী। গৌতমবাবু বলেন, “আসলে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের একাংশ এখনও সিপিএমের হাতে তামাক খাচ্ছে। তাই কংগ্রেস চাইছিল না যে জোট হোক। গতবার কংগ্রেসকে দুটি আসন দেওয়া হলেও এ বার ৪টি আসন ছাড়া হয়েছে। তার পরেও জোট করতে কংগ্রেসের আন্তরিকতার অভাব ছিল।” জোট নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে তৃণমূল ‘আন্তরিকতা’র যে অভিযোগ তুলেছে তা উড়িয়ে দিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “মানুষ জোট চেয়েছিলেন। জোট যাতে হয় সেই ব্যাপারে আমরা বার্তাও পাঠাই। |
তবু তৃণমূলের জন্যই জোট হল না। তবে যে সমস্ত আসনে আমরা প্রার্থী দিইনি সেখানে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে।” গত বার তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস মহাজোট করে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ১৬ আসনের মধ্যে জোট প্রার্থীরা পাঁচটি আসন পান। তার মধ্যে তৃণমূল একক ভাবে তিন টি এবং বিজেপি ও কংগ্রেস একটি করে আসনে জয়ী হয়। এ বার অবশ্য কংগ্রেস-তৃণমূল জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় ডাকাই হয়নি বিজেপিকে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের টিকিট নিয়ে দুই দলের জোট প্রক্রিয়ায় বাধা তৈরি হওয়ায় উদ্বিগ্ন দুই দলের সমর্থকেরা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরে ধূপগুড়ির এক হোটেলে দু’দলের নেতারা যখন আলোচনায় বসেন তখন সবকিছুই ঠিকঠাক এগোচ্ছিল। তৃণমূল প্রথমে তিনটি আসন দেওয়ার কথা বললেও বৈঠকে কংগ্রেসের জন্য নির্দিষ্ট ১, ১১, ১২, ১৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়ার কথা জানিয়ে দেন গৌতমবাবু। চারটি আসনে প্রার্থী দাঁড় করাতে কংগ্রেসও রাজি হয়। কিন্তু ওই চারটি ওয়ার্ডের যে কোনও একটির পরিবর্তে তাঁরা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডটি দাবি করেন। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে আসা বিকাশ মোস্তাফির জন্যই যে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড চাওয়া হচ্ছে সে কথাও কংগ্রেসের তরফে স্পষ্ট করেই জানানো হয়। তার পরেই বৈঠকের সুর বদলে যায়। গৌতমবাবু বলেন, “রাজনীতির হিসেবে সব সময় দুয়ে দুয়ে চার হয় না, পাঁচও হয়। মানুষ চাইছেন তৃণমূলকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে আমরা জিতে আসব।” জয়ে আশাবাদী কংগ্রেসও। |