সিপিআই নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নন্দগোপাল ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে ‘দূত’ হিসাবে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিআইয়ের দলীয় রীতি মেনে নন্দবাবুর মরদেহ বিধানসভা বা মহাকরণে নিয়ে যাওয়া হয়নি। কিন্তু শ্রদ্ধা জানাতে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ই সিপিআইয়ের রাজ্য দফতর ভূপেশ ভবনে গিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে সোমবার নন্দবাবুর শেষ যাত্রায় চোখে পড়ল রাজ্য রাজনীতিতে ‘সৌজন্যে’র আবহই।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে রবিবারই নন্দবাবুর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশে এ দিন রেলমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় এবং রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ভূপেশ ভবনে গিয়ে নন্দবাবুর মরদেহে শ্রদ্ধা জানান। মুকুলবাবু বলেন, “জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব বা জাতীয় জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব, এই নিয়ে বিতর্ক চালু থাকার মধ্যেই নন্দবাবুর প্রয়াণ অপূরণীয় ক্ষতি।”
মুখ্যমন্ত্রীর আর এক ‘দূত’ পার্থবাবু জানান, বিরোধী দলনেতা থাকাকালীন তিনি তৎকালীন মন্ত্রী নন্দবাবুর কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছিলেন।
স্পিকার বিমানবাবুর মতে, নন্দবাবুর মতো রাজনীতিক এখনকার দিনে বিরল। শাসক পক্ষের নেতা-মন্ত্রীদের পাশাপাশি প্রত্যাশিত ভাবেই এ দিন প্রয়াত সহকর্মীকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের নেতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। যদি তিনিও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু দিল্লিতে পলিটব্যুরো বৈঠক ছেড়ে এ দিন তড়িঘড়ি কলকাতায় ফেরেন নন্দবাবুকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই। ছাত্র আন্দোলনের সময় অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে তাঁদের নেতা নন্দবাবুর স্মৃতিচারণ করেন বিমানবাবু। ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের অশোক ঘোষ, আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামীরাও। পিস হেভ্ন থেকে এনে এ দিন নন্দবাবুর মরদেহ ভূপেশ ভবনে রাখা হয় শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। তার পরে সিপিআইয়ের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে শেষ যাত্রা যায় কেওড়াতলা শ্মশান পর্যন্ত। বিকালে সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য। |