পুরভোট
মনোনয়ন পর্ব শেষ, দুর্গাপুরেও জোট অনিশ্চিত
গে জোট ঘোষণা করা হলেও দুর্গাপুরে মনোনয়ন জমার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ‘রফাসূত্র’ খুঁজে পেল না কংগ্রেস-তৃণমূল। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পেরোতে ৪ দিন বাকি। তার মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে সমঝোতা না হলে রাজ্যের বাকি ৫ পুরসভার মতো দুর্গাপুরেও জোট ভেস্তে যাবে।
দুর্গাপুরে ১৯৯৭ সালে প্রথম পুরভোট থেকে বামেরাই টানা ক্ষমতায়। ৪৩ আসনের পুরসভায় ৩৭টি তাদের দখলে। গত বছর ‘পরিবর্তনের ভোটে’ তৃণমূল দু’টি বিধানসভা আসনে জিতলেও পুরসভা থেকে তাদের হটানো যে কঠিন, তা শাসকজোটের দুই শরিকই বিলক্ষণ জানে। ২৫ এপ্রিল দুর্গাপুরে কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি সুদেব রায়কে পাশে নিয়ে তৃণমূলের বর্ধমান জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাস জোটের কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু এর পরে দফায়-দফায় বৈঠকেও আসনরফা হয়নি। সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরোনোর পরে দেখা যায়, তৃণমূল সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। মনোনয়ন জমা পড়েছে ৪৭টি। কংগ্রেস দাবি করেছিল, তাদের ১৫টি ওয়ার্ড ছাড়া হোক। কিন্তু তৃণমূল ৯টির বেশি ছাড়তে চায়নি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসও সব ওয়ার্ড মিলিয়ে ৫১টি মনোনয়ন জমা দিয়েছে।
আগাম বোঝাপড়া না থাকলে ‘জোট’ ঘোষণা করা হয়েছিল কেন? সুদেববাবুর বক্তব্য, “আমরা জোটের কথা মাথায় রেখেই এগিয়েছিলাম। কিছু কারণে এই প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। প্রদেশ নেতৃত্ব বিষয়টি দেখছেন। তবে মানুষ জোট চাইছেন।” রাজ্যের আইনমন্ত্রী, তৃণমূল নেতা মলয় ঘটক পাল্টা বলেন, “আমরা তো ৯টা আসন দিতে চেয়েছিলাম। তা না মেনে কংগ্রেসই জোট ভেঙেছে। জোট বাঁচাতে হলে ওদের এগিয়ে আসতে হবে।” বিধায়ক অপূর্ববাবু বলেন, “মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১১ মে। সে দিনই সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে।” একই হাল বাকি পাঁচ পুরসভাতেও। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও হলদিয়া, বীরভূমের নলহাটি, জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি এবং নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্পেও জোট হয়নি। গত পাঁচ বছর পাঁশকুড়ায় জোট করে পুরবোর্ড চললেও এ বার ১৭টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই মনোনয়ন জমা দিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ১৫টিতে। হলদিয়ায় জোট তো হয়ইনি, তৃণমূলের অন্দরেই প্রার্থী নিয়ে কোন্দল চলছে। প্রথমে ২৬টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন মনোনয়ন জমা দিলেও এ দিন ২৬ জনকেই দলীয় প্রতীক দিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ২১টি আসনে।
নলহাটি পুরসভার ১৫টি আসনে আগেই মনোনয়ন জমা করেছিল তৃণমূল। এ দিন কংগ্রেসও সব আসনে মনোনয়ন দেয়। নলহাটির কংগ্রেস বিধায়ক তথা অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “মানুষ চান, কংগ্রেসের হৃতগৌরব ফিরুক। তাঁদের ইচ্ছার মর্যাদা দিতে প্রদেশ নেতৃত্বের সিদ্ধান্তে নলহাটিতে কংগ্রেস একা লড়ছে।” কুপার্সে ১২টি আসনেই কংগ্রেস ও তৃণমূল মনোনয়ন জমা দিয়েছে। ধূপগুড়ি পুরসভাতেও ১৬টি আসনেই মনোনয়নপত্র দিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস ১১টি আসনে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “গত বার কংগ্রেসকে দু’টি আসন দেওয়া হলেও এ বার চারটি ছাড়া হয়েছে। কিন্তু তাদের একাংশ সিপিএমের হাতে তামাক খাচ্ছে। তারা চাইছিল না জোট হোক।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু পাল্টা বলেন, “তৃণমূলের জন্যই জোট হল না। তবে যে সব আসনে প্রার্থী দিইনি, সেখানে তৃণমূলকেই ভোট দিতে আবেদন জানানো হবে।”
পুরভোটে জোট না-হওয়ার কারণ হিসেবে প্রধান শাসক দলের ‘অসৌজন্যমূলক’ মনোভাবকেই দায়ী করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, “তৃণমূল আমাদের নগণ্য আসন ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তা মেনে নেওয়া যায় না। এটা খুবই অপমানজনক। তাই ছয় জায়গাতেই কংগ্রেস পৃথক ভাবে মনোনয়ন পেশ করেছে।” দুর্গাপুর, পাঁশকুড়া, হলদিয়া, নলহাটি ও ধূপগুড়িতে পুরভোটে কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিলেও কুপার্স ক্যাম্পে প্রার্থী দিচ্ছে না বিজেপি। দলের নদিয়া জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, “ওখানে আমাদের সংগঠন দুর্বল। তাই আপাতত সংগঠন মজবুত করার উপরেই জোর দিচ্ছি।” পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর এবং বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী যথাক্রমে অশোক মাল এবং মনীষা চট্টোপাধ্যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.