পুরভোটে মুখোমুখি কংগ্রেস-তৃণমূল
পাঁচ বছর ধরে দু’দলের জোট পরিচালিত পুরবোর্ড চললেও এ বারের পুরভোটে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় মুখোমুখি লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল ও কংগ্রেস। জোট হয়নি হলদিয়াতেও। উপরন্তু এখানে প্রার্থীপদ নিয়ে কোন্দল চলছে তৃণমূলের অন্দরেই। ২৬টি ওয়ার্ডে মোট ৩৯ জন তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সোমবার, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে অবশ্য দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়েছে ২৬ জনকেই।
তৃণমূল, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দল প্রার্থী মিলে পাঁশকুড়ার ১৭টি ওয়ার্ডের জন্য মোট ৭৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে তৃণমূল। আর রাজ্যের জোটশরিক কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ১৫টি আসনে। ৫ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। বর্তমান কংগ্রেসের উপপুরপ্রধান আশুতোষ চক্রবর্তী এ বারও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন। বর্তমান তৃণমূলের পুরপ্রধান আব্দিল হাকিম খান গত বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়েছিলেন। এ বার আসনটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন।
অন্য দিকে, কয়েকদিন আগেই একসঙ্গে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে এসেছেন বামফ্রন্ট (সিপিএম ১১, সিপিআই ৫ ও ফরওয়ার্ড ব্লক ১) প্রার্থীরা। ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া বাকি ১৫টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিজেপি। এ ছাড়াও ৪টি ওয়ার্ডে এসইউসি ও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বর্তমানে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কল্যাণ রায় ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলর রিয়াজুল খান এ বার যথাক্রমে ৯ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আসন রফা নিয়ে শরিক দলের সঙ্গে টানাপোড়েনের পাশাপাশি প্রার্থীপদ নিয়ে দলের মধ্যেও দোলাচল চলছে তৃণমূলে। পাঁশকুড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে শেফালি বেরা ও জয়ন্তী মাইতি এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হরেন্দ্র মাইতি ও জাকিউর রহমান খান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সোমবার অবশ্য দলীয় ভাবে শেফালি বেরা ও জাকিউর রহমান খানকে প্রার্থী করার জন্য দলীয় প্রতীক পাওয়ার নথিপত্র জমা দেওয়া হয়। একেই গত বারের জোট শরিক কংগ্রেস এ বার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী, তার উপরে দলের মধ্যেই প্রার্থীপদ নিয়ে টানাপোড়েনে অস্বস্তিতে রয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “জয়ের সম্ভাবনা থাকায় অনেকেই প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। তবে, সমস্ত দিক বিবেচনা করেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
হলদিয়ার ২৬টি আসনে আগেই মনোনয়ন জমা দিয়েছিল বামেরা। এই পুরসভায় প্রথম থেকেই একক ভাবে লড়ার কথা ভাবছিল কংগ্রেস ও তৃণমূল। শেষমেশ জোটও হয়নি। উল্টে তৃণমূলের মধ্যেই প্রার্থীপদ নিয়ে টানাটানি চলে। তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে ৩৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও শেষ দিনে অবশ্য দল থেকে ২৬ জনের তালিকা ঠিক করে দেওয়া হয়। যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৭ জন স্থানীয় বিধায়ক শিউলি সাহার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ‘অধিকারী পরিবারের’ বিরুদ্ধে সম্মানহানির অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ শিউলিদেবী এ দিন বলেন, “যে ভাবে ওঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাতে আমি অসম্মানিত বোধ করছি। বিষয়টি মুকুল রায়কে জানিয়েছি। দলনেত্রীকেও জানাব।” তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। যাঁরা প্রতীক পেয়েছেন, তাঁরাই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত। তাঁরাই জয়ী হবেন।”
এ দিকে, হলদিয়ায় কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ২১টি আসনে। সোমবার কংগ্রেসের নির্বাচনী এজেন্ট মনোজ পাণ্ডেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই গোলমালের জেরেই ৫টি আসনে মনোনয়নপত্র দেওয়া যায়নি বলে দাবি কংগ্রেস নেতৃত্বের। তাঁদের অভিযোগ, ১১, ১৯, ২০, ২২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীর কাছ থেকে তৃণমূলের সমর্থকেরা মারধর করে মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়েছে। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আবার ২৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের লোকজন ভয় দেখানোয় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপি-র জেলা সভাপতি মতিলাল খাটুয়ার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.