|
|
|
|
সংখ্যালঘু উন্নয়ন |
কাজ দেখতে পশ্চিমে কমিশনের প্রতিনিধিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাজ্যের নতুন সরকার সংখ্যালঘু উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু কাজ কী ভাবে এগোচ্ছে, নিজেদের উন্নয়ন নিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরাই বা কতটা সতেচন, সে সব খতিয়ে দেখতে এ বার জেলায় জেলায় প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশন। প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী ১০ মে পশ্চিম মেদিনীপুরে আসবেন সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্যরা। নেতৃত্বে থাকবেন কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান মারিয়া ফার্নান্ডেজ।
সংখ্যালঘু উন্নয়নে গতবারের তুলনায় এ বার দ্বিগুণ অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য। গত আর্থিক বছরে সংখ্যালঘু উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছিল ৩৩০ কোটি টাকা। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৬৬০ কোটি টাকা। স্বভাবতই জেলার বরাদ্দও বেড়েছে। চলতি অর্থবর্ষে এই খাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পেয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কেশপুর, গড়বেতা ১ ও ৩ এবং মেদিনীপুর সদরজেলার এই ৪টি ব্লক ‘সংখ্যালঘু অধ্যুষিত’ হিসেবে চিহ্নিত। বরাদ্দ অর্থে এই চারটি ব্লকের জন্য বিশেষ-প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ৪টি ব্লকের যে সব এলাকায় সংখ্যালঘু বসতি বেশি, সেখানে পানীয় জলের ব্যবস্থা, আইসিডিএস কেন্দ্র তৈরি, সেচের ব্যবস্থা, স্কুলে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ করা হবে। ১৯টি স্কুলে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ৩২টি আইসিডিএস কেন্দ্র, ৭টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে সাড়ে ৭৫ লক্ষ টাকা। ১৬টি পানীয় জল-প্রকল্প তৈরির জন্য সাড়ে ৬৩ লক্ষ টাকা, ৩টি অগভীর নলকূপের জন্য ১১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
শুধু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ব্লকই নয়, যে সব ব্লকে সংখ্যালঘু মানুষের বসবাস কম, সেখানেও যাতে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়া যায়, সে জন্যও নানা পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। সেই মতো জেলার ৭০৯টি সংখ্যালঘু পরিবারকে ইন্দিরা আবাস যোজনায় এবং ২৫ জন দুস্থ সংখ্যালঘু মহিলাকে বিশেষ প্রকল্পে সরকারি জমি দিয়ে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। এ জন্য তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপও দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরে প্রাথমিকে ২১ হাজার ৬৪৭ জনকে ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ৩ হাজার ৭০৮ জনকে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যে সব কবরস্থানে সীমানা প্রাচীর নেই, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও কোনও স্কুল যদি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলের জন্য আবেদন করে, তার জন্যও সরকার অর্থ দেবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুর রহমানিয়া হাইস্কুলে ২০০ জন ছাত্রী থাকতে পারে এমন একটি হস্টেল তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ইমাম-ভাতাও দেওয়া হবে। জেলার ৭১৫ জন ইমাম এই ভাতা পাবেন। এ জন্য ইমামদের নথি-সহ আবেদন করতে বলা হয়েছে। আবেদনপত্র পেলেই ভাতা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক উন্নয়নে সব ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। উন্নয়নের কাজ দেখভাল করার জন্য সংখ্যালঘু ভবন তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। কালেক্টরেটের মধ্যেই ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেই ভবন তৈরি করা হবে। এই সব পরিকল্পনা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়িত করতে কাজ কেমন এগোচ্ছে, তা দেখতেই সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্যরা জেলায় আসছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে উন্নয়ন সংক্রান্ত সচেতনতা কতটা, তা-ও খতিয়ে দেখবেন কমিশনের সদস্যরা। |
|
|
|
|
|