|
|
|
|
|
ছেলেরা, সম্মানের জন্য
বাকি চারটে ম্যাচ খেলো
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় |
|
ইডেনে শনিবারটা একটা অসাধারণ অনুভূতি ছিল আমার কাছে। আমি সব সময় বিশ্বাস করি ইডেনই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেখানে ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক প্লেয়ারকে তার প্রাপ্য স্বীকৃতি দেন। এবং ইডেন সে দিন আরও এক বার আমার বিশ্বাসকেও দৃঢ় করল। কোনও সন্দেহ নেই, বিশ্বের সমস্ত ক্রিকেটার ইডেনে অন্তত এক বার খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে।
এই মাঠ আমার দীর্ঘ ক্রিকেট-ভ্রমণের আঁতুরঘর। বাংলা বা ভারত যার হয়েই আমি ইডেনে খেলি না কেন, সব সময় উপভোগ করেছি। আর রাজ্য বা জাতীয় দল, যার হয়ে যখন এই মাঠে নেমেছি সব সময় জানতাম গ্যালারির গর্জন পুরোদমে আমার জন্য থাকবেই। তবে গত শনিবারটা ইডেন ঠাসা দর্শক আমার প্রতি যে ভালবাসা আর আবেগ উজাড় করে দিলেন সেটা সত্যিই আমার কাছে ভীষণ আবেগময়। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।
আরও যেটা উত্তেজক ছিল তা হল সে দিনের ম্যাচে দু’টো টিমের থেকেই দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট তুলে ধরা। হাই-ভোল্টেজ আবহ ছিল। টানটান উত্তেজনা। তার সঙ্গে দু’টো দল যে লড়াইটা দেখাল, সেটা কিন্তু একটা বোনাস। আমি নিশ্চিত সে দিনের ম্যাচের টিকিটের দাম দর্শকদের পুরোপুরি উসুল হয়ে গেছে। কেকেআর-কে গৌতম আর ব্রেন্ডন মিলে দুর্দান্ত স্টার্ট দিয়েছিল। কিন্তু আমরাও চমৎকার ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছিলাম। বোলাররা বেশ ভাল লাইন-লেংথে থিতু হতে পেরেছিল। একটা সময় কেকেআর-কে দেখাচ্ছিল বিরাট স্কোর তুলবে। আমাদের বোলাররা কিন্ত ওদের অনেক কম রানে আটকে রাখে।
সত্যিই আমাদের জেতার টাগের্র্ট ইডেনের স্লো উইকেটেও তাড়া করার মতোই ছিল। কিন্তু ইনিংসের গোড়ার দিকে খুব বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলায় টার্গেটের থেকে সাত রান পিছনে পড়ে থাকলাম। সুনীল নারিন সবচেয়ে মুগ্ধ করল। আম্তর্জাতিক ক্রিকেটে ও এখন নতুন ‘রহস্য বোলার’-এর আখ্যা পাচ্ছে। যেমন কয়েক বছর আগে অজন্তা মেন্ডিস-কে বলা হচ্ছিল। অজন্তার মতো নারিন-ও ভবিষ্যতে পরীক্ষার সামনে পড়বে। পুণে ওয়ারিয়সের্র কথায় আবার ফেরা যাক। আমাদের শেষ তিনটে ম্যাচের কথা ধরলে দেখা যাবে আমরা হেরেছি যথাক্রমে ১৩, ১ আর ৭ রানে। এতেই বোঝা যায়, জয়ের দড়িটা পেরনোর জন্য ‘ফিনিশ’ করার যে চেষ্টাটা আমরা করছি সেই চেষ্টায় অতি জরুরি ‘অতিরিক্ত’ ব্যাপারটার অভাব থেকে গেছে। জেতার সুযোগ তৈরি করেও আমরা সফল হচ্ছি না। সত্যি বলতে কী, আমরা বেশ ক’টা ‘ক্লোজ’ ম্যাচ হেরেছি, যার প্রত্যেকটা ফল আমাদের পক্ষে যাওয়া উচিত ছিল। যে ফ্যাক্টরটা এড়ানোর জন্য আমরা নানান চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেগুলো সফল না হওয়ায় এই মুহূর্তে যা দাঁড়িয়েছে, আমাদের শেষ চারটে ম্যাচে স্রেফ ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে। প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা পুণে ওয়ারিয়র্সের কার্যত শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাদের এখন মাঠে নেমে বিপক্ষের উপর সটান ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার। আমার কথা হল ছেলেরা, এখন অন্তত নিজেদের সম্মানের জন্য খেলো! |
|
|
|
|
|